শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

অনাথ বালিকাদের নিরাপদ আশ্রম

আবদুল বারী, নীলফামারী

অনাথ বালিকাদের নিরাপদ আশ্রম

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের চাওড়া ডাঙ্গি গ্রাম। তিস্তার প্রধান খালের কোল ঘেঁষে অবস্থিত এ গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে চাঁদমনি আশ্রম। যেখানে আশ্রয় দেওয়া হয় অসহায় ও অনাথ বালিকাদের। বর্তমানে এ আশ্রমে ৩২ জন অসহায় ও অনাথ বালিকা রয়েছে। এদের কারও বাবা নেই, কারও মা নেই। আবার কারও বাবা-মা কেউই নেই। চাঁদমনি আশ্রম অনাথদের দিয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। বাবা-মায়ের মতো আদর ভালোবাসা ও লেখাপড়ার সুযোগ দিয়েছে। করেছে ভাত-কাপড়ের ব্যবস্থা। দিয়েছে জীবনের নিরাপত্তা। এই আশ্রম চালাচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা পিজিরুল আলম দুলাল। তার নিজের কোনো সন্তান নেই। পৈতৃকসূত্রে পাওয়া ১০ শতক জমিতে ১৯৯৯ সালে পাঁচজন অনাথ বালিকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। এরপর এখানে আশ্রয় নেওয়া বালিকাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি স্বাবলম্বী করে তোলার চেষ্টা করেন তিনি। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০ অনাথ বালিকা চাঁদমনিতে থেকে পড়াশোনা শেষ করেছে। এ আশ্রমে পাকা টিনশেডের ১০টি রুমে বসবাস করেন অনাথ বালিকারা। যেখানে রয়েছে শোয়ারঘর, নামাজঘর, রান্নাঘর ও বাথরুম। খেলাধুলার জন্য আছে প্রশস্ত জায়গা। জান্নাতুল ফেরদৌস নামে একজন জানায়, নয় বছর ধরে আমি এখানে আছি। এবার এসএসসি পরীক্ষা দেব। বাবা মারা যাওয়ার পর মা আমাকে চাঁদমনিতে রেখে যান। এখানে ভালো আছি। পড়ালেখা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। পড়ালেখা ও ভরণ-পোষণের জন্য যা প্রয়োজন সবই এখান থেকে দেওয়া হয়।

অষ্টম শ্রেণির হুমাইরা জানায়, আমার বাবা নেই। মা চাঁদমনিতে রেখে গেছেন। বড় আপুরা আমাকে নিজের বোনের মতো ভালোবাসেন। এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি হাতের কাজ শিখি। জলঢাকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বাহাদুর বলেন, পিজিরুল আলম দুলাল অসহায় বালিকাদের পুনর্বাসিত করতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকেন। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যখনই পারি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেই। চাঁদমনির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক পিজিরুল আলম দুলাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকি বলেন, অনাথ এবং দরিদ্র বালিকাদের কল্যাণে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। পেনশনের সব টাকা চাঁদমণির কাজে ব্যয় করছি। এ ছাড়া পৈতৃক ও নিজের প্রায় সব জমি চাঁদমনি প্রতিষ্ঠার কাজে লাগিয়েছি।

সমাজের বিত্তবানদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। এ আশ্রম সম্পর্কে জেলা প্রশাসনের প্রকল্প পরিচালক আবদুর সাত্তার বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে আশ্রমটি নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে। এছাড়া জেলার সর্বসাধারণের মনে স্থান করে নিতে পেরেছে।

 

সর্বশেষ খবর