শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভেজাল মসলায় বাজার সয়লাব

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

ভেজাল মসলায় বাজার সয়লাব

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ভেজাল গুঁড়া মসলায় ছেয়ে গেছে বাজার। শহরের পাইকারি ও খুচরা দোকান খেকে শুরু করে উপজেলার গ্রামীণ হাটবাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে এ ভেজাল গুঁড়া মসলা। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় দীর্ঘদিন এ ব্যবসা করে আসছেন। আর রমজান মাসে ওই অসাধু চক্রটি আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাজার থেকে এসব মসলা কিনে যেমন প্রতারিত হচ্ছেন মানুষ, তেমনি রয়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা। উপজেলা প্রশাসন ও জেলা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর বিভিন্ন সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল-জরিমানা করলেও বন্ধ করতে পারছেন না এ মানহীন গুঁড়া মসলার ব্যবসা। সম্প্রতি মসলা গুঁড়ায় রং মেশানের অপরাধে রকির মসলা মিল ও মাসুম মসলা মিলকে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া সুমরা মসলা মিল ও নিউ জননী স্টোর সামায়িক সিলগালা করা হয়েছিল। সর্বশেষ ৯ মার্চ আঙ্গুর মিয়ার মসলা মিলে জরিনামা করা হয়। জানা যায়, এ উপজেলায় ১৩টি মসলা মিল রয়েছে। এসব মিল থেকে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী মরিচ, হলুদ ও ধনিয়া গুঁড়ো করে দোকানে বিক্রি করছেন। কয়েক মিল মালিকও এই গুঁড়া মসলা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। মসলার গুঁড়ার সঙ্গে তারা মিশ্রণ করছেন রং, চালের গুঁড়া, ভুসি ও কাঠের গুঁড়া। পাইকারি দোকান থেকে এসব গুঁড়া মসলা কিনে নিচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের হাট-বাজারের ব্যবসায়ী। বিশেষ করে এখানকার চা বাগানগুলোতে এ গুঁড়া মসলা সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া এখান থেকে গুঁড়া মসলা কিনে নিচ্ছেন জেলার বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসায়ীরা। সরেজমিন শহরের সেন্ট্রাল সড়ক, নতুন বাজার, পুরান বাজার ও পোস্ট অফিস সড়কের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক কেজি ভালো মচির গুঁড়া ৪০০ টাকা, হলুদ ১৮০ ও ধনিয়া ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর ভেজাল মরিচ গুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। হলুদ ১০০ ও ধনিয়া ৮০-৯০ টাকা কেজি। ব্যবসায়ী বিধান পাল বলেন, ক্রেতার চাহিদার থাকায় আমরা কমদামি মসলা গুঁড়া দোকানে রাখছি। সঙ্গে ভালোটাও আছে। অন্য ব্যবসায়ী যাদু দেব ও এম এ মতিন বলেন, ভেজাল গুঁড়া মসলায় বাজার ভরে যাওয়ায় ক্রেতারা বিভ্রান্তিতে পড়েন। তারা ভালো খাপার না বুঝেই ক্রয় করছেন। ক্রেতা সনজিত বৈধ্য বলেন, ভালো খারাপ চেনার কোনো উপায় নেই। তাই বাজারে যা পাচ্ছি তাই কিনে নিচ্ছি। বিএমএ শ্রীমঙ্গল শাখার সভাপতি ও সাবেক বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হরিপদ রায় বলেন, ‘ভেজাল মসলা গুঁড়া খেলে খাদ্য নালিতে আলসার, গ্যাস্টিক, ডায়রিয়া ও ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে। আমরা এখন প্রায়ই এসব রোগী পেয়ে থাকি।’

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর