শনিবার, ১৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

সুখদহ নদ এখন দুঃখদহন

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

সুখদহ নদ এখন দুঃখদহন

নাব্য হারিয়ে ‘মরাখাল’ সুখদহ নদ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়া থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে সুখদহ নদ। তলদেশ ভরাট, দখল, দূষণ আর পানি প্রবাহ না থাকায় দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে নদ। বর্ষাকালে পানি দেখা গেলেও সারা বছর থাকে না। এক সময় সারিয়াকান্দি উপজেলায় কৃষি কাজে লাগলেও এখন সেই নদে চর জেগেছে। সুখদহ নদে আর মাছ দেখা যায় না। ময়লা-আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় নদের পাড় দখল করে রেখেছে কেউ কেউ। সুখদহ নদ এখন দুঃখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, গাবতলী উপজেলার বালিয়াদিঘী মৌজা থেকে সুখদহ নদটি সৃষ্টি হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে কিছুদূর গিয়ে সারিয়াকান্দি উপজেলায় প্রবেশ করেছে। এরপর নদটি কয়েক কিলোমিটার ঘুরে আবার গাবতলীর দুর্গাহাটা ইউনিয়ন হয়ে সারিয়াকান্দির ফুলবাড়ি মৌজা দিয়ে নারচী ও পরবর্তীতে বাঙালি নদে মিলিছে। সুখদহের দৈর্ঘ্য প্রায় ১০ কিলোমিটার। সারিয়াকান্দির ফুলবাড়ি এলাকায় নদটি এখন খালে পরিণত হয়েছে। এক সময়ের সারিয়াকান্দির ঐতিহ্যবাহী খরস্রোতা সুখদহ নদ এখন মানচিত্র থেকে হারাতে বসেছে। উজান থেকে আসা পলিজমে এবং কোথাও মাটি ভরাটের ফলে হারিয়েছে নাব্য ও গতিপথ। এ নদ দিয়ে এক সময় পালতোলা নৌকা যেত। নানা কৃষিপণ্য পরিবহন হতো নৌকায়। বিভিন্ন হাটবাজারে এ নদীপথেই চলাচল করতেন এলাকাবাসী। নদটি আগের সেই যৌবন হারিয়েছে। এখন আর নৌকা চলাচল করে না। বিভিন্ন এলাকা শুকিয়ে গেছে। সেখানে কৃষকরা বোরোসহ বিভিন্ন ফসল ফলাচ্ছেন। কোথাও আছে হাঁটুপানি। ময়লা ফেলায় পানিতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। তলদেশ ভরাট হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই নদ ভরে লোকালয় প্লাবিত হয়। এ সুখদহ নদী এ কারণে এলাকায় দুঃখদহন বলে পরিচিত হয়েছে। সারিয়াকান্দি উপজেলার নারচী ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বান্টু বলেন, সুখদহ মরাখালে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, নদটির দুই পাড় প্রভাবশালীরা মাটি দিয়ে ভরাট করে বসতবাড়ি দোকানসহ বিভিন্ন স্থপনা গড়ে তুলেছেন। ফুলবাড়ী বাজারের উত্তর এবং দক্ষিণ পাশের কয়েক কিলোমিটার নদপাড় বেদখল হয়ে গেছে। সারিয়াকান্দির                 ফুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুত তারিক মোহাম্মদ বলেছেন, সুখদহ আমাদের ইউনিয়নের একমাত্র ভরা যৌবনা নদ ছিল। এ নদী পারাপারে খেয়া ছিল। পাল তুলে ছুটতো মালবাহী পালতোলা নৌকা। এখন দখল, দূষণে মরে যাচ্ছে নদ। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, প্রথম পর্যায়ে প্রতি উপজেলায় একটি করে নদী খননের কাজ চলছে যা শেষ পর্যায়ে। দ্বিতীয় পর্যায়ে দেশের অন্য নদগুলো খননের জন্য প্রকল্প দেওয়া আছে। প্রকল্পটি পাস হলে সুখদহ নদও খনন করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর