রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

নাটোরে পদ্মার বালু-মাটি লুট

ভাঙনের হুমকিতে বসতভিটা ও ফসলি জমি

নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরে পদ্মার বালু-মাটি লুট

অবৈধভাবে তোলা বালু ও মাটি পরিবহনের জন্য রাখা ট্রাক। নাটোরের লালপুরে পদ্মা নদীর নিমতলী এলাকার ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সরকারি নিয়ম তোয়াক্কা না করে ও অনুমোদন ছাড়াই নাটোরের লালপুরে রাতে এবং দিনে প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে পদ্মা নদীতে বালু ও মাটি হরিলুটের হিড়িক। মাটি ও বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে এবং স্থানীয় প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছেন না পদ্মা নদীর তীরবর্তী মানুষেরা। ফলে প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন তারা। এ ছাড়া ভয়ভীতি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয়দের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়াসহ চেয়ারম্যান ও স্থানীয়দের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বালু ও মাটি উত্তোলনকারীদের নামে। উৎকোচের বিনিময়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পানিশূন্য পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে নিমতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় রাতে ও দিনে অবৈধভাবে ভেকু দিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মাটি খেকোরা বলে অভিযোগ তোলেন স্থানীয়রা। এতে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর অপরিকল্পিতভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের কারণে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঈশ্বরদী ইপিজেড, পাকশি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, লালপুর প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক জোন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের গরিবের ঘর, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, থানা ভবন, হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি, বাড়িঘর, দীর তীর রক্ষা বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এ বিষয়ে পদ্মায় বালু ও মাটি উত্তোলনকারীর পক্ষ থেকে একজন বলেন, আমরা বৈধভাবে ইজারা নিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করছি। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ টুটুল বলেন, পদ্মা নদীর নিমতলীসহ বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের প্রতিবাদে এলাকাবাসীদের নিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছি। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলসহ জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকায় নিউজগুলো প্রকাশ হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন বরাবর আবেদন দেওয়া হয়েছে। তার পরেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ রঞ্জু বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), লালপুর থানার ওসিসহ আমি পদ্মা নদীর নিমতলী এলাকায় বালু ও মাটি উত্তোলের জায়গা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। এ কারণে বালু ও মাটি উত্তোলনকারীদের পক্ষ থেকে আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, আর বালু ও মাটি উত্তোলনের বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক বলেন, পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু ও মাটি উত্তোলনের বিষয়টি জানা ছিল না। অবৈধ বালু ও মাটি উত্তোলনের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা সুলতানা বলেন, পদ্মা নদী এলাকায় ইজারার বাইরে বালু ও মাটি উত্তোলন করার কোনো সুযোগ নেই। এ ছাড়া অবৈধ মাটি ও বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত আছে।

 

সর্বশেষ খবর