রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

জলোচ্ছ্বাসে ভেসে মারা যাওয়ার শঙ্কায় সুন্দরবনের বাঘ হরিণ

বাগেরহাট প্রতিনিধি

ধেয়ে আসা অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোয় সর্বোচ্চ ১২ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানানোর পর সুন্দরবনের বাঘ হরিণসহ বন্যপ্রাণিকুল আবারও ভেসে মারা যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সুপার সাইক্লোন সিডর, আইলা, মহসিন, বুলবুল, আম্ফান ও ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারা যায় সুন্দরবনের অনেক বাঘ হরিণসহ বন্যপ্রাণী। তবে, বনবিভাগ বলছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার-চট্টগ্রাম এলাকায় আঘাত হানতে যাওয়ায় অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস না হলে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ভেসে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে শনিবার ভোর থেকে সুন্দরবনে পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে বনবিভাগ। এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল থেকে সব লাইটার জাহাজকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মোংলা বন্দর চ্যানেলে নিরাপদে পণ্যবাহী ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙর করে রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের বড় ছয়টি যুদ্ধ জাহাজ মোংলা বন্দরে এসে নোঙর করেছে। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার ১০টি পয়েন্টে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় জলোচ্ছ্বাসের হুমকিতে রয়েছে কয়েক লাখ মানুষ। সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার মোকাবিলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কারণে শনিবার ভোর থেকে সুন্দরবনে পর্যটকসহ সব ধরনের বনজীবীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ৩০টি হরিণ, ১২৩টি লবণ পানি প্রজাতির কুমির ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ৪৩২টি বাটাগুর বাচকা কচ্ছপ নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনে ৮৮টি পুকুরের পাড় উঁচু থাকায় ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের সময় বন্যপ্রাণীরা সেখানে আশ্রয় নিয়ে থাকে বলে জানিয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস না হলে এবার সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী ভেসে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনে ১১৪টি বাঘ, ২ লাখ হরিণ, ৫০ হাজার বন্য শুকর, ৪০ হাজার বানর, ৩০০ কুমির, ৩০ হাজার উদবিড়ালসহ ৩৭৫ প্রজাতির বিভিন্ন বন্যপ্রাণী রয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপটেন মোহাম্মদ শাহিন মজিদ জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল থেকে সব লাইটার জাহাজকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মোংলা বন্দর চ্যানেলে নিরাপদে পণ্যবাহী ১১টি বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙর করে রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের বড় ছয়টি যুদ্ধ জাহাজ মোংলা বন্দরে এসে নোঙর করেছে। এসব যুদ্ধ জাহাজের মধ্যে রয়েছে নৌবাহিনীর বিএনএস বঙ্গবন্ধু, বিএনএস স্বাধীনতা, বিএনএস প্রত্যাশা, বিএনএস প্রত্যায় ও কোস্টগার্ডের বিসিজিএস তাজউদ্দিন ও বিসিজিএস সৈয়দ নজরুল। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দরে এলার্ট নম্বর -‘২’ জারি রয়েছে। সতর্ক সংকেত আরও বাড়ানো হলে বন্দরে পণ্য ওঠা-নামার বন্ধ করা হবে।

সর্বশেষ খবর