শনিবার, ২০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

তিস্তা সেতুতে পাথরবোঝাই ট্রাক চলাচলে ঝুঁকি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

তিস্তা সেতুতে পাথরবোঝাই ট্রাক চলাচলে ঝুঁকি

হালকা যানবাহন চলাচলের অনুমতি থাকলেও প্রতিদিন সহস্রাধিক ভারী যানবাহন চলাচল করছে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর ওপর দিয়ে। প্রতিটি ট্রাকে ৪০-৫০ মেট্রিক টন ওজনের পাথর নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। এতে চরম ঝুঁকিতে পড়েছে কাকিনা-মহিপুর রুটে তিস্তা নদীর ওপর শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেতুর দুই পাশের ১৯ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। স্থানীয প্রশাসন বিষয়টি অবগত হওয়ার পরও রহস্যজনক কারণে নীরব থাকায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয়রা। যে কোনো সময় সেতুটি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে বলে স্থানীয়দের আশঙ্কা। স্থানীয়রা বলেন, প্রতিদিন সেতুর ওপর দিয়ে ১৪০০-১৫০০ ট্রাক চলাচল করছে। এসব ট্রাক পাথর নিয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে আসে। পাথরবোঝোই ট্রাকগুলো যখন সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করে তখন সেতুটি কম্পন করতে থাকে। সেতুটি তাদের উপকারে এসেছে। তারা খুব সহজে এবং কম খরচে রংপুর সিটিতে যাতায়াত করতে পারছেন। এতে তাদের অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে। কিন্তু সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়বেন। বুড়িমারী স্থলবন্দরের ট্রাকচালক নবির হোসেন বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দরে ১৯০০ ট্রাক তালিকাভুক্ত রয়েছে। প্রায় সব ট্রাকই শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। এ রুটে যাতায়াত করায় তাদের ৫৫ কিলোমিটার পথ কম ঘুরতে হয়। এতে তেলের সাশ্রয় হয় ১৩-১৫ লিটার। এ সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করলে কোনো টোল দিতে হয় না। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, ১২১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা নদীর ওপর ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে সেতুটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। প্রথম ছয়মাস এর ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় সেতুটি ও সংযোগ সড়ক মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে। ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে সেতুটির সংযোগ সড়কে তিনটি ব্যারিকেড তৈরি করে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে হালকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। গেল ফেব্রুয়ারি মাসে সংযোগ সড়কের ওপর থেকে ব্যারিকেডগুলো তুলে দেওয়া হয়। এখন সেতুর ওপর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর কাদের ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ব্যারিকেডগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে। হালকা যানবাহন চলাচলের অনুমতি থাকলেও এখন পাথরবোঝাই ভারী যানবাহন চলাচল করছে। এটা অবশ্যই সেতু ও সংযোগ সড়কের জন্য ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা ইউএনও জহির ইমাম বলেন, সেতুর ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, সেতুর ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারে সেজন্য পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

 

সর্বশেষ খবর