বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
নদীর বুকজুড়ে সোনালি ধান

হাজার একর জমি অবৈধ দখলে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

হাজার একর জমি অবৈধ দখলে

শিবগঞ্জে এককালের প্রমত্তা পাগলা নদীর বুকজুড়ে চাষাবাদ হচ্ছে সোনালি ধান। তবে নদীতীরবর্তী প্রায় ১ হাজার একর জমি দখলবাজদের কবলে রয়েছে। এদিকে কালের আবর্তে শিবগঞ্জের একসময়ের প্রবল খরস্রোতা পাগলা নদী এখন কেবলই কালের সাক্ষী। নদীর বুকজুড়ে এখন ধানসহ বিভিন্ন ফসলের সমারোহ দেখা যায়। জানা গেছে, পাগলা নদীর একটি উপশাখা ‘চকের নদী’ নামে পরিচিত। এ নদীটি ছিল শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা, বিনোদপুর ও দুর্লভপুর ইউনিয়নজুড়ে। নদীতীরবর্তী এলাকার বৃদ্ধ কয়েক ব্যক্তির মতে, এ নদীটি প্রায় ২০০ বছর আগের। নদীটি ঘিরে বিনোদপুর ইউনিয়নের চৌকা বিওপি, মনাকষা ইউনিয়নের মনাকষা হাট, আদিনা সরকারি কলেজ, হুমায়ুন রেজা উচ্চবিদ্যালয়, মনাকষা শ্মশান, দাদনচক হাট, মনাকষা বিওপি, দাদনচক পিটিআই, নীলকুঠির কারখানা, দুর্লভপুর ইউনিয়নের হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম তর্তিপুর মহাশ্মশান, তর্তিপুর মেলা, তর্তিপুর ঘাটসহ ছোটবড় বিভিন্ন ধরনের শতাধিক স্থাপনা গড়ে উঠেছে। এ নদীর তীরঘেঁষে মনাকষা ইউনিয়নের খড়িয়াল ও পারচৌকা গ্রামের সামনে ব্রিটিশ সরকার বিরাট এলাকাজুড়ে নীলকুঠি তৈরি করে এলাকার হাজারো কৃষককে বিনা পারিশ্রমিকে নীল চাষে বাধ্য করেছিল। নীল চাষে কৃষক অনাগ্রহ দেখালে সহ্য করতে হতো কঠিন নির্যাতন। এলাকার বৃদ্ধ ব্যক্তিরা জানান, এ চকের নদী দিয়ে আগে বড় বড় নৌকা ছিল একমাত্র যানবাহন। ৫০০ মণী নৌকাযোগে দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসা করতে আসতেন বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসায়ী। এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদীটি চৌকা বিওপির অধীন সীমান্ত এলাকা হয়ে ভারত থেকে বয়ে এসে তর্তিপুর ঘাট পার হয়ে মহান্দা নদীতে মিশেছে। এ নদীর ওপর বর্তমানে পাঁচ-ছয়টি ব্রিজ রয়েছে। যে ব্রিজগুলোর তলাজুড়ে এখন দখলবাজরা খাল করে ফসল ফলাচ্ছে। জানা যায়, এ নদীর হাজার হাজার একর জমি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে স্বাধীনতাবিরোধীরা নিজ নামে রেকর্ড করিয়ে নেয়। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জুবায়ের হোসেন বলেন, বর্তমানে খাস ও নদীর জমি দখলমুক্ত করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু খাসজমি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তদন্ত সাপেক্ষে সব খাসজমি ও নদীর জমি দখলমুক্ত করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে এনে জনস্বার্থে ব্যবহার করা হবে বলেও জানান তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর