কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর খুলে দেওয়া হয়েছিল সাভারের আশুলিয়ার পোশাক কারখানাগুলো। তবে গতকাল সকালে আশুলিয়ার নরসিংপুর এলাকার বেঙ্গল ও হামিম গ্রুপের পোশাক কারখানায় দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় সকাল ১০টার দিকে উইন্টার ড্রেস, কাজল গার্মেন্টস, নিউ হরাইজন, মেট্রোসহ কয়েকটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। কারখানাগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে শ্রমিকরা যে কোনো পরিস্থিতিতে কারখানা খোলা রাখার দাবি জানান। শ্রমিকরা বলেন, তারা কাজ করতে চান। যে কোনো পরিস্থিতিতে কারখানাগুলো খোলা রাখা হোক। তৈরি পোশাক শ্রমিক রুবেল আহমেদ বলেন, এ সময়টিতে আমাদের বেতন দেওয়া হয়। এখন কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম। বাসা ভাড়া আর দোকানের বাকি বিল দেব কীভাবে পরিশোধ করব। আমি চাই, যে কোনো মূল্যে গার্মেন্টসগুলো খোলা রাখা হোক। আমরা কাজ করতে চাই। এতদিন বন্ধ থাকার কারণে আমাদের মালিকদেরও অনেক ক্ষতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। গার্মেন্টস মালিকরা অনেক লোকসানের মুখে পড়েছে। ভেবেছিলাম অতিরিক্ত কাজ করে ক্ষতি পুষিয়ে দেব। কিন্তু এখন আবার আজ থেকে বন্ধ করে দেওয়ায় হতাশ হয়েছি। উইন্টার ড্রেস লিমিটেডের কারখানার শ্রমিক ফারজানা আক্তার বলেন, আকস্মিক কারখানা বন্ধ করে দিল, কিছুই বুঝতে পারছি না।
কারখানা বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে উইন্টার ড্রেস লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন. জামগড়া এলাকার আশপাশের বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে বিভিন্ন ঝামেলার কথা শুনেছি। কোনো কোনো ফ্যাক্টরিতে নাকি হামলা ও লুটপাট হয়েছে। এ কারণে আতঙ্কিত হয়ে আমরা কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা ভেবে আজকের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছি। আগামীকাল থেকে আমাদের কারখানার যথারীতি খুলে দেওয়া হবে। আশুলিয়ার শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন বহিরাগতদের চাপেই কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছুটি ঘোষণার বিষয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর কোনো সিদ্ধান্ত নেই। বহিরাগতরা যেভাবে কারখানার সামনে গিয়ে অস্থিরতা তৈরি করছেন, কারখানা ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাতে নিরাপত্তার কারণে পোশাক শিল্প মালিকরা কারখানার ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছেন।
সাভারে হেমায়েতপুর একেএইচ কারখানার ডিএমডি আবুল কাসেম বলেন, পোশাক কারখানা চলছে, কোনো সমস্যা নেই। তবে অসহযোগের মধ্যে কারখানায় হাজিরা নিশ্চিত করতে এদিন দুর্ভোগে পড়েন কয়েক লাখ শ্রমিক। শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ার ১৮০০ শিল্প কারখানায় কাজ করেন ১০ লাখের বেশি শ্রমিক। তিনি আরও বলেন, বর্তমান অস্থিরতা দীর্ঘায়িত হলে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে ক্রয়াদেশ অন্য দেশে সরিয়ে নিতে পারেন- এমন শঙ্কা তৈরি হয়েছে।