নানান সংকটে শেরপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। ডাক্তার নেই, রোগ পরীক্ষার কিট নেই, কর্মচারী নেই, ওষুধ নেই। এতে বেহালদশা স্বাস্থ্যসেবা দালাল, চোর, নেশাখোরের আনাগোনায় জেলার এ শীর্ষ চিকিৎসা কেন্দ্রটিতে রয়েছে নিরাপত্তার ঘাটতি।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছেন, প্রতিদিন হাসপাতালের ১৯ বিভাগে গড়ে অন্তত ৪০০ রোগী ভর্তি থাকে। বহির্বিভাগে গড়ে ২ হাজার মানুষ সেবা নিতে আসে। বছর পাঁচেক আগে এ হাসপাতালকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ঘোষণা করা হয়। বাস্তবে এখানে ১০০ শয্যার সুবিধাও নেই। ১০০ শয্যা হাসপাতালের চাহিদা অনুসারে এখানে ৫৭ জন ডাক্তার থাকার কথা। আছেন মাত্র ২৬ জন। প্রতিদিন ট্রেনিং ও ছুটিতে থাকেন গড়ে অন্তত ছয়জন। হাসপাতালে একজন মাত্র সরকারি সুইপার। ৩৯ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর বিপরীতে আছেন ১৮ জন। চতুর্থ শ্রেণির ২৬ জন কর্মচারীর বিপরীতে আছে সাতজন। দুর্গন্ধে ওয়ার্ডগুলোতে থাকা দায়। জেলার শীর্ষ চিকিৎসা কেন্দ্র এ হাসপাতাল নিয়ে মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। অন্তত ১০ বছর আগে জেলা হাসপাতালকে ২৪ ঘণ্টা ইওসি (ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার) ঘোষণা করা হয়। তবে অফিস চলাকালে কিছু সেবা পাওয়া গেলেও বেলা ১টার পর এ হাসপাতালে অতীব জরুরি সেবা পাওয়ার সুযোগ নেই বলছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, জরুরি বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ ইসিজি সেবা পর্যন্ত পাওয়া যায় না। জোড়াতালি দিয়ে জরুরি বিভাগ চলছে। বহির্বিভাগে ডাক্তারসংকটে প্রতিদিন থাকে রোগীর লম্বা লাইন। রোগ পরীক্ষানিরীক্ষার ল্যাবরেটরির কিট নেই আট-নয় মাস। ল্যাব খোলা থাকলেও কিটের অভাবে কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি অকেজো হওয়ার উপক্রম। পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও দুটি সচল। চালক একজন তবে তিনি গুরুতর অসুস্থ। অভিযোগ আছে, অযত্ন-অবহেলায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্সগুলো এখন বিকল। কিছুদিন আগেও আউটসোর্সিংয়ের ড্রাইভার দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানো হতো। এ কার্যক্রমটি পরিচালক বন্ধ করে দিয়েছেন। ১৭ কোটি টাকার আইসিইউ যন্ত্রপাতি এখন ধুলাবালিতে ঢাকা। এর যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাচ্ছে। হাসপাতাল ও আশপাশে নেশাখোরদের অবাধ বিচরণ। চোর-ছিনতাইকারীর অত্যাচারসহ নানান কারণে হাসপাতালে নিরাপত্তা ঘাটতির কথা স্বীকার করে তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক সেলিম মিয়া বলেন, ‘সমস্যা ব্যাপক। সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। আন্তরিকতার অভাব নেই। তবে সীমিত লোকবলে এত রোগীর সেবা দেওয়া কষ্টকর।’ তাঁর দাবি, ওষুধ পর্যাপ্ত আনা হয়েছে। পরীক্ষাগারের কিট পাওয়া গেছে।