নাজুক পরিস্থিতি সঙ্গে যানবাহনের তীব্র চাপে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে ঢাকা-সিলেট এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক। এরমধ্যে মহাসড়কে নিষিদ্ধ সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, বিভারটেকসহ তিন চাকার ক্ষুদ্র যান যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে উঠেছে। উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা-সিলেট এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে এসব যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরও তা চলাচল বন্ধ হয়নি। এতে প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা। মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হচ্ছে তরতাজা প্রাণ। বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৫ মাসে ৩৬টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে ৩৪ জন। আহত হয়েছে ৫৩ জন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-সিলেট এবং চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়ক দুটির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৭৬ কিলোমিটার অংশে দূরপাল্লার যানবাহনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে নিষিদ্ধ সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, বিভারটেক, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ তিন চাকার যান। মহাসড়কে নৈরাজ্য বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রীন লাইন, হানিফ, শ্যামলী, লন্ডন এক্সপ্রেস ও এনা’র মতো দূরপাল্লার পরিবহনের চালকরা।
বাসচালক লিয়াকত মিয়া বলেন, সিএনজি চালকদের বেশিরভাগই প্রশিক্ষণ ছাড়াই মহাসড়কে চলে আসে। তারা যেখানে সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে দেয়। আমাদের গাড়ির গতি থাকে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। হঠাৎ গাড়ি দাঁড় করতে পারি না। ফলে দুর্ঘটনা অনিবার্য হয়ে পড়ে।
জেলা লোকাল বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নেয়ামত খাঁন জানান, মহাসড়কে তিন চাকার এই অবৈধ সিএনজি অটোরিকশার জন্য প্রায়ই ঘটছে বড় বড় দুর্ঘটনা। বন্ধের জন্য ২০১২ সালে আমি উচ্চ আদালতে রিট করেছিলাম। রায়ও পক্ষে আসে। ২০১৫ সালে অপর এক রিটের প্রেক্ষিতে দেশের ২২টি মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা, বিভাটেক, নসিমন, করিমন ভটভটি চলা চলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঢাকা-সিলেট এবং কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের অংশ রয়েছে।
সিএনজি অটোরিকশা চালক আরিফুর রহমান বলেন, মহাসড়কে আসতে হয় গ্যাস নেওয়ার জন্য। বিভিন্ন উপজেলায় যেতে হলে মহাসড়ক অতিক্রম করতে হয়। হাইওয়ে পুলিশসহ থানা পুলিশ ধরে নিয়ে অবৈধ বলে মামলা দেয়। বাড়তি টাকা আদায় করে নিচ্ছে। আমাদের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ রয়েছে। চালক আনোয়ার হোসেন জানান, পুলিশকে ম্যানেজ করেই মহসড়কে গাড়ি চালাচ্ছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিআরটিএ মোটরযান পরিদর্শক মো. মহসিন মিয়া জানান, বৈধ অবৈধ মিলিয়ে জেলায় কমপক্ষে ২০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মামুন রহমান জানান, মামলা দিয়েও মহাসড়কে থ্রি হুইলার বন্ধ করা যাচ্ছে না। এগুলোর ব্যাপারে সরকারের উপরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জব্দ করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. দিদারুল আলম জানান, আরটিসি. বৈঠকে এ নিয়ে একাধিক বার কথাবার্তা হয়েছে। জব্দ এবং বাজেয়াপ্ত জায়গার অভাবে করা যাচ্ছে না।