ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের তীব্র শব্দের ইলেকট্রনিক হর্ন আর উচ্চ শব্দের সাইলেন্সর লাগানো বাইকের শব্দে অতিষ্ঠ নওগাঁ শহরবাসী। নওগাঁর তেঁতুলিয়া কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রতিদিন মাইকের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। এরা স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, সরকারি অফিস আদালত কিছুই মানে না। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ করা খুব জরুরি। স্থানীয় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া বলেন, শব্দদূষণ নওগাঁয় একটি বড় সমস্যা। অযথা যত্রতত্র উচ্চ শব্দে মাইক ও সাউন্ডবস্ক বাজানো হচ্ছে। এতে পড়াশোনায় সমস্য হচ্ছে। অশান্তিও সৃষ্টি হচ্ছে। শব্দদূষণ রোধে সবার এগিয়ে আসা উচিত।
নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁ জিলা স্কুলে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিভাবক জানান, অসহ্য হয়ে পড়ে যখন একটির পর একটি মাইক উচ্চ শব্দে প্রচার করতে করতে স্কুলের সামনে দিয়ে যায়। নওগাঁ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমুল হোসাইন বলেন, ২০০৬ সালে শব্দদূষণের গেজেট প্রকাশের পর নতুন আর কোনো গেজেট প্রকাশ হয়নি। ওই গেজেটে জেলা পর্যায়ের পরিবেশ অধিদপ্তরে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে কী ভূমিকা তার বিশদ উল্লেখ নাই। নওগাঁ মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মিলন কুমার চৌধুরী বলেন, ৮০ বা তার চেয়ে বেশি উচ্চমাত্রার শব্দ মানুষের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। শিশুদের ক্ষেত্রে শব্দদূষণ মারাত্মক ক্ষতিকর। তাদের শ্রবণেন্দ্রিয় খুবই স্পর্শকাতর। উচ্চমাত্রার শব্দ একবার কানে প্রবেশ করলে কানের শব্দ গ্রহণের স্পর্শকাতর স্থানে এর ক্রিয়া চলমান থাকে। মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি করে। চিন্তাশক্তি ও বিশ্লেষণ ক্ষমতার (কগনেটিভ ফ্যাংশন) ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। রক্তের চাপ বেড়ে যায়। হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে। সব সময় কানে যদি শোঁ শোঁ ভোঁ ভোঁ শব্দ হতে থাকে। ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক এক ধরনের হর্ন ব্যবহার করছে। যার শব্দ ভীষণ তীব্র। যা সরাসরি কানের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাত করে। নওগাঁ শহরে ৬০ থেকে ৯০ ডেসিবেল শব্দে নানাভাবে শব্দদূষণ চলছে।