ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় কুমার নদের পাড়ে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট। স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিদের ধারণা মতে, এই হাটটি শতাধিক বছরের পুরোনো। প্রতি বছর জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত এ নৌকার হাটে নৌকা বিক্রি হয়ে থাকে।
ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক দিয়ে এ হাটটির অবস্থান ভাঙ্গা-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের শুরুতেই ভাঙ্গা উপজেলার কুমার নদের তীরে উপজেলা খাদ্যগুদামের পাশেই। বর্ষা মৌসুমে প্রতিদিনই এখানে নৌকা বিক্রি হয়ে থাকে। তবে ভাঙ্গায় প্রতি সোম ও শুক্রবার হাটের দিন থাকায় নৌকার হাট বেশি জমজমাট থাকে। ভাঙ্গা ও আশপাশের এলাকায় এটিই একমাত্র নৌকার হাট।
ভাঙ্গা নৌকার হাটে গিয়ে গতকাল দেখা যায়, বিশাল জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে নৌকা উঠেছে। কয়েক শ নৌকা হাটে উঠেছে। সেখানে কথা হয় ভাঙ্গা পৌরসভার ছিলাধরচর মহল্লার বাসিন্দা ব্যবসায়ী শ্যামল মালোর (৫২) সঙ্গে। তিনি বলেন, বর্তমানে ভাঙ্গা অঞ্চলে পাটের মৌসুম চলছে। পাট নেওয়া ও ধোওয়ার কাজে নৌকার প্রয়োজন হয়। তাই এই সময় নৌকার চাহিদা বেশি হয়। এ বছর অনেক নৌকা বিক্রি হচ্ছে। ঘারুয়া ইউনিয়নের চৌকিঘাটা গ্রামের সফি বেপারী (৭৫) বলেন, ‘এই হাটে আমি ৫৫ বছর ধরে নৌকার ব্যবসা করি। হাটে কোষা নৌকা (ছোট নৌকা) ওঠে। আকার ও ধরন ভেদে ভিন্ন ভিন্ন দামে নৌকা বিক্রি করে থাকি।’ নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের জুঙ্গুরদী গ্রামের সেন্টু ঠাকুর বলেন, ‘আমাদের এলাকায় নৌকা কেনা-বেচার হাট নেই। তাই প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূর থেকে এখানে নৌকা কিনতে এসেছি।’ ভাঙ্গার আলগী ইউনিয়নের গোডাউন বালিয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর চৌধুরী (৭২) বলেন, ‘নৌকা না কিনলে পাট ঘরে তুলতে পারব না। তাই আজ নৌকা কিনতেই হবে।’