উচ্ছেদের কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার উত্তর চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ বেদখল হয়ে গেছে। এতে ওই বিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক চলাচল, খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়ের ১৩ শতক আয়তনের স্কুল মাঠে দুটি দোকান ঘর তোলা হয়েছে, সেখানে রয়েছে কৃষকের খড়ের পালা ও বসতবাড়ী। গোটা এলাকাজুড়ে বেধে রাখা হয়েছে অনেকগুলো গবাদিপশু, মাঠ যেন গৃহস্থের উঠোন।
জানা গেছে, ১৯৯১ সালে স্থানীয় বিদ্যুৎতসাহী ব্যক্তি মৃত শমসের আলী তার পৈত্রিক ৩৩ শতক জমিতে উত্তর চন্ডিপুর বে-সরকারি রেজিস্টার্ড প্রতিষ্ঠান করেন। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে স্কুলের মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২০৩ জন। যার মেধা, শ্রম ও অর্থে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে সেই মৃত শমসের আলী তার জীবদ্দশার শেষ দিন পর্যন্ত স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
বর্তমানে তার বড় ছেলে আজাহারুল ইসলাম সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, চোখের সামনে তার বাবার স্বপ্নের এ বিদ্যালয়টির খেলার মাঠ বেদখল হয়ে গেল। আমন ও বোরো মেৌসুম এলে স্কুল মাঠ ফসল তোলার উঠানে পরিণত হয়।
এদিকে, দখলদার মুদি দোকানী মুর্তজা রহমান (৫০) দাবী করেন, স্কুলের জায়গা-জমি আমাদের পরিবারের দেয়া। তাছাড়া স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় থেকে আমি দোকান করে আসছি। আমিতো স্কুলের কোনো কাজে ব্যঘাত সৃষ্টি করছি না।
খড়ের পালা ও বসতবাড়ীর মালিক ইব্রাহিম আলী স্কুলের জায়গা দখলের কথা স্বীকার করে জানান, প্রতিষ্ঠাতার পরিবারের লোকজনই তো স্কুলের বেশীর ভাগ জমি দখল করে রেখেছে। তারা ছাড়লে আমিও ছেড়ে দিবো।
৬১ নং উত্তর চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হোসেন বলেন, মাঠটি দখলমুক্ত করার জন্য দুই বছর পূর্বে তিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দরখাস্ত করেছেন। কিন্তু কোনো সুরাহা পাননি।
পার্বতীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম বলেন, অল্প দিন হলো আমি পার্বতীপুর উপজেলায় যোগদান করেছি। এর মধ্যে এ ধরনের ১১টি আবেদন পেয়েছি। কিন্তু এসব স্কুলের জমির মালিকানার দলিলপত্র, খারিজ খাজনা পরিশোধের সঠিক নথি না পাওয়ায় সেগুলো দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিতে রাজি হয়নি প্রশাসন।
বিডি-প্রতিদিন/১১ মার্চ ২০১৬/শরীফ