বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেছেন, লবণের দাম কমে গেলে আমাদের দেশে লবণ চাষই বন্ধ হয়ে যাবে। যদিও বিদেশের বাজারে প্রতি কেজি লবণের দাম দুই টাকা। অথচ এদেশে লবণের কেজি ৪০ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দ্দেশনা রয়েছে, লবণ চাষীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য সম্ভাব্য যা করা দরকার এ সরকার তাই করবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চলতি মৌসুমের লবণ উৎপাদন পরিস্থিতি অত্যন্ত ভাল। এবার শীত কম, কুয়াশা নেই। তাই আবহাওয়া লবণ উৎপাদনের অনুকূলে রয়েছে। এসব কারনে গেল বছরের চেয়ে এবারের মৌসুমের গত ২ মাসে ৪৩ হাজার মেট্রিক টন লবণ বেশী উৎপাদন হয়েছে। এ কারনে এবার দেশে অহেতুক লবণ আমদানি করা হবে না।
মঙ্গলবার কক্সবাজারে আয়োজিত এক লবণ চাষী সমাবেশে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। কক্সবাজার পাবলিক হল মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ সমাবেশে তিনি আরও বলেন, গত কয়েক বছরের লবণের ক্ষতি পোষাতে চাষীদের ঋণ মওকুফের জন্য অর্থমন্ত্রীর সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই সাথে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে চলতি মৌসুমে লবণ চাষীদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার জন্য।
লবণ চাষী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে কক্সবাজার জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, স্থানীয় এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল ও এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, রেজাউল করিম, আনোয়ার পাশা চৌধুরী, মোহাম্মদ শফিক মিয়া, নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, কক্সবাজার পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী ও লবণ চাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাইছার ইদ্রিস প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
বক্তারা দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদন কেন্দ্র কক্সবাজার উপকূলের ৫০ হাজার লবণ চাষীদের ভাগ্যোন্নয়নে লবণ বোর্ড গঠনের মাধ্যমে তা জেলা সদরে স্থাপনের দাবী জানান। তা ছাড়াও লবণকে কৃষিজাত পণ্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করণেরও দাবী জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেন, ২০১৯ সালের জানুয়ারির মধ্যেই বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নেতা-কর্মীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতেও আহ্বান জানান। মন্ত্রী কক্সবাজারের অভুতপূর্ব উন্নয়ন বিষয়ে বলেন, '১৯৮৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সাথে কক্সবাজার সফরে এসেছিলাম। সেদিন যে কক্সবাজার দেখে গিয়েছিলাম, সেই কক্সবাজার আজ পাল্টে গেছে। যা না দেখলে বুঝা যাবে না।’
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে কক্সবাজার জেলা সবচেয়ে উন্নয়নে এগিয়ে গেছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার এখন স্বর্গপুরি। এখানে বর্তমানে ১০টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার দ্রুত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে কক্সবাজার হবে বিশ্বের জন্য মডেল। পরে বাণিজ্যমন্ত্রী বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল চ্যানেল আই ও রানার গ্রুপের উদ্যোগে টানা পঞ্চম বারের মতো ‘চ্যানেল আই-রানার বিচ ফুটবল’ ফাইনাল খেলায় পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে যোগ দেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭/মাহবুব