আগামীকাল ১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ১৯৭৬ সালের এই দিনে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানি ফারাক্কা অভিমূখে লংমার্চ করেন। সেই থেকে এ দিনটি ফারাক্কা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এদিকে ফারাক্কার প্রভাবে এখন মৃতপ্রায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের নদীগুলো। এক সময়ের খরস্রোতা এ নদীগুলো এখন সরু নালায় পরিণত হয়েছে। নদী শুকিয়ে যাওয়ার এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশের উপর। ধ্বংস হচ্ছে জীব বৈচিত্র। পদ্মার উজানে ভারত ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মাণ করার পর থেকেই এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে। পদ্মার উজানে ভারত ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মাণ করার পর থেকেই এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে।
গত চার দশকে এ প্রভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নদীতীরবর্তী এলাকায়। শুষ্ক মৗসুমে একরকম মরুভূমিতে পরিণত এই এ এলাকা। আবার হঠাৎ করে ফারাক্কার পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে হঠাৎ বন্যায় ভেসে যায় এ অঞ্চল। ব্যাপকভাবে নদী ভাঙনও দেখা দেয়। অব্যাহত নদী ভাঙনে গত দেড় দশকে লাখো মানুষ হয়েছেন বাস্তুচ্যুত। শেষ সম্বল হারিয়ে অনেকেই হয়েছে নিঃস্ব। সব মিলিয়ে ফারাক্কা এ অঞ্চলের মানুষ জীবন করে তুলেছে দুর্বিষহ।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সাহিদুল ইসলাম জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে খুব কাছেই ফারাক্কা ব্যারেজের অবস্থান। আর এ কারণে প্রভাবটাও অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশি। পদ্মার শাখা নদীগুলো পানি শুন্যতায় ভুগছে। অন্যদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মঞ্জুরুল হুদা মনে করেন, ফারাক্কার কারণে পানি শূণ্যতায় কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হতে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলার শেষ সীমানায় ১৯৭৫ সালে নির্মাণ করা হয় ফারাক্কা ব্যারেজ। পরের বছরের ১৬ মে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানি ফারাক্কা অভিমূখে লংমার্চ করেন। সেই থেকে এ দিনটি ফারাক্কা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। মওলানা ভাসানী ১৯৭৬ সালে ফারাক্কার যে নেতিবাচক প্রভাবের কথা ভেবে এর বিরুদ্ধে লংমার্চ করেছিলেন, আজ তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ। তারা ফারাক্কা ব্যারেজের প্রভাবে মরুর কবল থেকে রক্ষা পেতে চান। আর এ জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ মে, ২০১৭/ আব্দুল্লাহ সিফাত-২৪