ঝিনাইদহে জেলায় বারবার বিভিন্ন সময়ে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়ায় এলাকাবাসী চরমভাবে ভীত হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, এখানে জনগণের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। সম্মিলিত প্রতিরোধেই জঙ্গি দমন করা সম্ভব। এদিকে গত রোববার বিকালে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাজেদুর রহমানের আদালতে মহেশপুর জঙ্গি আস্তানা থেকে গ্রেফতারকৃত বাড়ির মালিক নব্য জেএমবি জহুরুল হক ও তার ছেলে জসিমকে হাজির করা হয়। এ সময় বিচারক জহুরুল হককে ৫দিন ও ছেলে জসিমকে ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সূত্র জানা যায়, দুই হোমিও চিকিৎসক, পুরোহিত ও সেবায়েত হত্যাকাণ্ডের পর ঝিনাইদহ জেলায় এবার একের পর এক জঙ্গি আস্তানার সন্ধান মিলছে। এসব আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে জঙ্গিদের নাশকতা কাজে ব্যবহৃত শক্তিশালী গ্রেনেড, বোমা, অস্ত্র ও বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে গুলশান হোলি আর্টিজান হামলার মূল হোতা নিবরাসসহ জঙ্গিদের নিরাপদ ঘাঁটি গড়ে তোলার পরিকল্পনাকারী ও আশ্রয়দাতাদের নামও বেরিয়ে আসছে। ঘটনার শুরু ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি গান্না ইউনিয়নের বেলেখাল বাজারে ধর্মান্তিক বৃদ্ধ হোমিও চিকিৎসক খাজা ছমির উদ্দিনের হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে। এরপর একের পর এক হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা ঝিনাইদহে নিজেদের উপস্থিতির প্রমাণ দিয়েছেন। ঝিনাইদহ জেলা এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কিত জনপদে। নিরাপত্তা বাহিনীর জালে গুপ্ত হত্যাকারী জঙ্গিরা ধরা পরার পর কিছুদিন তারা এলাকা থেকে সরে যায়। এরপর গত ২২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের ঠনঠনিয়া পাড়ার নব্য মুসলিম আব্দুল্লাহ’র বাড়িতে। সে ওই ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল। গত ৭ই মে মহেশপুর উপজেলার বজ্রাপুরে ও সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামে সন্ধান পাওয়া যায় দুইটি জঙ্গি আস্তনার। মহেশপুরে অভিযান চালালে আত্মঘাতি বোমা হামলায় নব্য জেএমবির সদস্য সেই আব্দুল্লাহ ও পুলিশের গুলিতে তুহিন নিহত হয়। সেখান থেকে আটক করা হয় বাড়ির মালিক জহুরুল হক ও তার ছেলে জসিমকে। জঙ্গিবাদের ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের দাবি, ৩টি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল তা সফলভাবে নির্মূল করতে পেরেছি। এখানে জনগণের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। আমার সবসময় সাধারন মানুষের পাশে আছি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ কলেজ অধ্যক্ষ বাদশা আলম জানান, ইসলামে জঙ্গিবাদের কোন স্থান নেই। নৈতিক ও মানবিক শিক্ষা পাঠাপুস্তকে অন্তর্ভূক্ত করে বেশি বেশি পাঠাদান করালে জঙ্গিবাদ অনেকটা কমে আসতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার