বরিশালে চামড়ার মৌসুমি ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। লাভের আশায় কোরবানির চামড়া কিনে আড়তে বিক্রি করতে গিয়ে হতাশ হয়েছেন তারা। লাভ তো দূরের কথা, যে দরে খুচরা পর্যায়ে চামড়া কিনেছেন, সেই মূলধনও ফেরত ওঠেনি অনেকের। অপরদিকে চামড়ার আড়তদাররা পর্যাপ্ত পূঁজির অভাবে ভরা মৌসুমে চমড়া সংগ্রহ করতে পারছেন না। ঢাকার ট্যানারী মালিকরা বিগত ৩ বছরের বকেয়া পরিশোধ না করায় ধারদেনা করে কোনমতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন তারা। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সরকারের বেঁধে দেয়া দর না মেনে বিক্ষিপ্তভাবে চামড়া কেনায় ধ্বস নেমেছে বাজারে। দর পতন হওয়ায় বিপুল সংখ্যক চামড়া রয়ে গেছে বিভিন্ন মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোডিংয়ে। অপরদিকে চামড়ার অবৈধ পাঁচার রোধে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সারা বছর চামড়া কেনাবেচা হলেও মূলত কোরবানির পশুর চামড়ার দিকেই তাকিয়ে থাকেন চামড়ার আড়তদাররা। এবারের ঈদুল আযহায় সরকার ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট কাঁচা চামড়া ৪০ টাকা দর নির্ধারণ করে দিলেও সেই নিয়ম মানেন নি মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা। বিক্ষিপ্তভাবে মনগড়া দরে চামড়া কেনার পর আড়তে বিক্রি করতে গিয়ে নিরাশ হয়েছেন তারা। লাভ তো দূরের কথা, শেষ পর্যন্ত লোকসান গুনতে হয়েছে অনেককে।
বরিশাল চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক জিল্লুর রহমান মাসুম বলেন, সরকার প্রতি বর্গফুট লবনজাত গরুর চামড়া ঢাকায় ৫০ থেকে ৫৫ এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারন করেছে। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের ভুল ধারনা ছিল সরকার কাঁচা চামড়া প্রতি বর্গফুটের দর নির্ধারণ করেছে। স্থানীয় আড়তদাররা প্রতি বর্গফুট কাঁচা চামড়া কিনেছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা দরে। তারা না বুঝে বাড়তি দরে চামড়া কিনে লোকসানের মুখে পড়েছে।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদুর রহমান শাহীন বলেন, ঢাকার হাজারীবাগ থেকে ট্যানারী সাভারে স্থানান্তর করা নিয়ে ব্যস্ত মালিকরা। চামড়া কেনা কিংবা জেলা পর্যায়ে পূর্বের বকেয়া পরিশোধের দিকে তাদের নজর নেই। বকেয়া না পাওয়ায় তারাও পূঁজির অভাবে মাঠ পর্যায় থেকে পর্যাপ্ত পরিমান চামড়া সংগ্রহ করতে পারেননি। দর কম হওয়ায় লিল্লাহ বোডিং এবং বিভিন্ন মাদ্রাসায় প্রচুর সংখ্যক মজুদ রয়ে গেছে। তারা দর বাড়ার আশায় থাকলেও এই চামড়া লবনজাত করা সহ সার্বিক ব্যবস্থাপনা করতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের দ্বিগুন লোকসান গুনতে হতে পারে।
বরিশাল থেকে না হলেও যশোর-সাতক্ষীরা বর্ডার থেকে প্রতি বছরের মতো এবারও বিপুল পরিমাণ চামড়া ভারতে অবৈধ পাচারের আশংকা স্থানীয় আড়তদারদের।
যদিও কোরবানির পশুর চামড়ার অবৈধ পাচার রোধে পুলিশ সক্রিয় বলে জানিয়েছেন- বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন। তিনি বলেন, কোরবানির পশুর চামড়াবাহী ট্রাক সব ঢাকামুখী, উল্টো দিকে চামড়া বোঝাই ট্রাক চলতে দিচ্ছেন না।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার