টাঙ্গাইলের সখীপুরে কাংগাালীছেও দক্ষিণ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয়টি শ্রেণির সবগুলো ক্লাস নেন মাত্র একজন শিক্ষিকা। ক্লাস নেয়া, ক্লাস রুম ঝাড়ু দেয়া, অফিসিয়াল কাজে দৌড়া-দৌড়ি করা, ক্লাসের ঘণ্টা বাজানো, পরীক্ষা ফ্রি আদায় ও পরীক্ষা নেয়াসহ সকল প্রকার কাজ করেন সেলিনা আক্তার নামের একজন শিক্ষিকা। প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক এমনকি পিয়নের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি একাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই বিদ্যালয়ে মোট ৭০ জন শিক্ষার্থী। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণির সবগুলো ক্লাস নেন তিনি একাই। সকাল ৯ টায় স্কুলে আসেন আর বিকেল সাড়ে চারটায় চলে যান ওই শিক্ষিকা। এভাবে প্রায় তিন মাস ধরে সেলিনা আক্তার ওই স্কুলের সকল দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
একাধিক অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, এই মাসের ১৯ তারিখে সমাপনী পরীক্ষা। তার পর বার্ষিক পরীক্ষা। শিক্ষকের অভাবে লেখাপড়ার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
একটি সূত্রে জানা গেছে, এই স্কুলের জন্য কোন শিক্ষক নেই। দাড়িয়াপুর আকন্দপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ডেপুটিশনের মাধ্যমে সেলিনা ম্যাডামকে এই স্কুলে পাঠানো হয়েছে। আরো একজন শিক্ষককে ডেপুটিশনের মাধ্যমে এই স্কুলে পাঠানো হবে বলে উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিলেও অনেক দিন পার হয়ে গেলেও কোন শিক্ষক দেয়া হয়নি। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে আগামী বছর থেকে এই স্কুলে শিক্ষার্থী সংকট দেখা দিতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
ওই স্কুলের উর্মি মন্ডল নামের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী বলেন, আমাদের মাত্র একজন ম্যাডাম। ভালোমতো সবগুলো ক্লাস হয় না।
শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার বলেন, আমি আসলে এই স্কুলে শিক্ষক না। ডেপুটেশনের মাধ্যমে এই স্কুলে পাঠানো হয়েছে। এখন আমার সাধ্যমতো এই স্কুলের সবগুলো ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি । এই স্কুলে ৫ জন শিক্ষক প্রয়োজন।
উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এসএম নূরুল ইসলাম বলেন, এভাবে কোন স্কুল চলতে পারেনা। শিক্ষা অফিসারকে বার বার তাগিদ দেয়া সত্বেও কোন লাভ হচ্ছেনা।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। কিছু দিনের ভেতরে ডেপুটেশনের মাধ্যমে ওই স্কুলে আরো একজন শিক্ষক দেয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/৭ নভেম্বর ২০১৭/হিমেল