রাঙামাটির পাহাড়ে রসালো কমলার বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদিত এসব কমলা স্বাদে মিষ্টি। তাই বৃদ্ধি পাচ্ছে পাহাড়ে কমালার চাষ। আর ফলনও মিলছে ভালো। পাহাড়ি বাগানে প্রতি গাছে গাছে ঝুলছে পাকা-আধাপাকা, ফিকে হলুদ রঙের কমলা। এসব উৎপাদিত কমলা বর্তমানে বিভিন্ন হাট-বাজার সয়লাব হয়েছে।
রাঙামাটি জেলায় সাধারণত দুটি প্রজাতির কমলার চাষ হয়ে থাকে। একটি সাজেক অন্যটি খাঁশিয়া। এসব কমলা খেতেও মজাদার। তাই চাহিদা অনেক।
রাঙামাটি জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটির জেলার বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, নানিয়ারচর উপজেলা ও সদর এ ৪টি উপজেলায় এসব কমলার চাষ করা হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঢালু জায়গায় প্রতিটি টিলায় রসালো আর মিষ্টি কমলার বাগান গড়ে তুলেছে চাষীরা। এক একটি টিলায় ২০০ থেকে ৩০০ কমলার গাছ রয়েছে। এসব বাগানে এ বছর কমলার ফলন হয়েছে খুব ভালো। তবে এখনো ভালো ভাবে পাকেঁনি। আবার কোন কোন বাগানের, কমলায় রং ধরেছে। এসব উৎপাদিত কমলায় বর্তমানে বিভিন্ন হাট-বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। তাছাড়া দামও কম হওয়ায় চাহিদাও প্রচুর।
এ বছর রাঙামাটি জেলায় ৭৪৫ হেক্টর জমিতে কমলার চাষ হয়েছে। তার উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ছিল ৭হাজার ৬৩৯ মেট্টিক টন। মধ্যে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার উৎপাদিত কমলা এখন বাজারের শীর্ষস্থান দখল করেছে। এসব মিষ্টি ও টসটসে রসালো কমলা পাহাড় ছেড়ে রপ্তানি হচ্ছে দেশের বিভিন্নস্থানে। স্থানীয় হাট-বাজারে প্রতি ডজন কমলা বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা থেকে মাত্র ৬০টাকায়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় পার্বত্য তিন জেলায় ব্যাপক হারে কমলার বাগান গড়ে ওঠে। এবারের মৌসুমে পাহাড়ে কমলার উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম সহনীয় পর্যায়ে।
অন্যদিকে অপর দু’পার্বত্য জেলা খাগরাছড়ি ও বান্দরবানেও বেপক কমলার চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার বলে জানা গেছে।
রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণণ প্রসাদ মল্লিক জানায়, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় এবছর কমলার চাষ বেড়েছে। তাছাড়া ফলনও ভালো হয়েছে। পাহাড়ের মাটি কমলা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। মাটি উর্বর হওয়ায় পাহাড়ের কমলাগুলো মিষ্টি ও রসালো হয়ে থাকে। তবে গান্ধী পোকার আক্রমণের কারণে কমলা তাড়াতাড়ি গাছ থেকে ঝড়ে পরচ্ছে। এজন্য কমলা গাছের পরিচর্যা প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য সার ও ঔষধ প্রয়োগের কলাকৌশল চাষীদের জানা খুবই প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, ১৩বছর আগে রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেক ইউনিয়নে প্রথম কমলার চাষ করা হয়। সেসময় কমলার বাম্পার ফলন হয় পাহাড়ে। তাতেই অল্প সময়েই সুনাম অর্জন পাহাড়ি কমলা। এখন সাজেক ছাড়াও পার্বত্য তিনটি জেলায় প্রচুর কমলার চাষ করা হয়। পাহাড়ি মাটিতে কমলার উৎপাদন বাম্পার হওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন
