মাদারীপুরের কালকিনি পৌর মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে পৌর পরিষদের ৮ জন কাউন্সিলর দুর্নীতির অভিযোগ এনে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালকিনিতে উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে পৌরএলাকায়।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে একটি তদন্ত দল দুই পক্ষের কাছ থেকেই তথ্য প্রমাণ হাজির সাপেক্ষে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়েছে। তদন্ত চলাকালে কালকিনি পৌর ভবনের পৌর কাউন্সিলররা নিরাপত্তা জনিত কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।
পরে কাউন্সিলরা তদন্ত কমিটির কাছে পৌর ভবনের নিরাপত্তার বিষয় আপত্তি তুললে অভিযোগের সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সাক্ষীদের মাদারীপুর সার্কিট হাউজে নিয়ে এসে তদন্ত করছে তদন্ত কমিটি।
পৌর কাউন্সিলরদের অনাস্থাপত্র থেকে জানা গেছে, পৌরসভার মাসিক সভায় কাউন্সিলরদের সাদা কাগজে সই করে পরে নিজের ইচ্ছামাফিক রেজুলেশন লিখে পৌর পরিষদের সিদ্ধান্ত হিসেবে চালানো, প্রতিবাদকারী কাউন্সিলরদের মাসিক ভাতা বন্ধ করা, কোন রকমের টেন্ডার ছাড়াই পৌরসভার বিভিন্ন কাজ মেয়র তার আপন ভাই, আত্মীয় স্বজন, নিজের পছন্দের গুটি কয়েক কাউন্সিলর, নিজস্ব ঠিকাদারকে দিয়ে ইচ্ছামাফিক বিল করে তা পরবর্তীসভায় পাস দেখিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছেন, ৫৫ টি সরকারি প্রকল্প যেনতেন ভাবে বাস্তবায়ন দেখিয়ে নিজে লাভবান হয়েছেন, কোটেশনের মাধ্যমে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে অনেক ক্ষেত্রে কাজ বাস্তবায়ন না করেই টাকা উত্তোলনসহ আরো অনেক অনিয়ম উল্লেক করে পৌরসভার ৮ জন কাউন্সিলির মেয়রের বিরুদ্ধে আনাস্থা নোটিশ স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবরে প্রদান করেছেন।
গত ৭ জুন পৌর পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ যে ৮ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন তারা হলেন- নাসির শিকদার, অলিল হাওলাদার, বি.এম তোফাজ্জেল হোসেন, মো. জসীম বেপারী, গোলাম মোস্তফা বেপারী, হাবুল চৌকিদার, ফুলমতি বেগম, আসমা খাতুন।
স্থানীয় সরকার বিভাগ অভিযোগ আমলে সোমবার ২ জুলাই একটি তদন্ত দল তদন্ত শুরু করেছে।
এ ব্যাপারে কালকিনি পৌর মেয়র এনায়েত হোসেন হাওলাদার বলেন, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত চলাকালে আমি কোন মন্তব্য করতে রাজি নই। তদন্ত শেষে হলেই আপনারা দেখতে পারবেন অভিযোগগুলো সত্যি কি না?’
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. ওহিদুল ইসলাম বলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যদি তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান