পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় তিন ফসলি জমি ও বসতভিটা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছে প্রস্থাবিত লোন্দা মৌজার হতদরিদ্র কৃষকরা। মঙ্গলবার বেলা এগারটায় উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের গিলাতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দীর্ঘ লাইনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নারী-পুরুষ, শিশু ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কৃষক মো.আবদুল লতিফ সরদার বলেন, তিন ফসলি জমিতে কোন বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হবেনা- প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে আরপিসিএল (রুরাল পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড) ধানখালীর তিন ফসলি জমি অধিগ্রহন করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র র্নিমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এছাড়া আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে তারা জমির মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জমি দখলে নেয়ার পায়তারাও করছে। অবসরগ্রহনকারী স্কুল শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, সরকারের উন্নয়ন কাজের প্রয়োজনে আমরা তিন ফসলি জমি প্রদান করব। কিন্তু কোন বেসরকারী কোম্পানীকে জমি প্রদান করব না।
একই বক্তব্য তুলে ধরে কৃষক মাসুম বলেন, বাপ-দাদার পেশা কৃষি কাজ করে জীবিকা র্নিবাহ করি। সারা বছর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এই মাটিতেই সবুজ সোনা উৎপাদন করি। জীবিকার অনিশ্চয়তা নিয়ে পূর্ব পুরুষের ভিটে-কবরস্থান ছেড়ে দেবনা। অপর কৃষক নয়ন বলেন, এই জমি অধিগ্রহন নিয়ে আরপিসিএল’র বিরুদ্ধে পটুয়াখালী জজ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে চলমান মামলায় আদালত ভূমি অধিগ্রহনে সংশ্লিস্ট কোম্পানীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু আরপিসিএল আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবহার করে মামলা-হামলার হুমকি দিয়ে জমি দখল করতে চায়।
ষাটার্ধো গৃহিনী জাহানারা বেগম বলেন, জান দেব তবু জমি দেবনা। এই জমিতে জড়িয়ে আছে হাজারো কষ্ট-সুখের স্মৃতি। এখানে ছেলের কবর রয়েছে। সেখানে ব্যক্তি মালিকানার কোন সুবিধা নিতে দিবনা।
উল্লেখ, উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের ১৩২০ মেঘাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশেই গিলাবাড়িয়া এলাকায় ২০০ একর আবাদী জমি অধিগ্রহন করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এতে প্রায় সাড়ে তিনশ' পরিবারসহ তিন ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/৩ জুলাই ২০১৮/হিমেল