প্রতি বছরের ন্যায় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা গতকাল শুক্রবার পালন করলো মৃত লোকের পার্বণ। সারা বিশ্বের খ্রিষ্ট বিশ্বাসী বিশেষ করে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের সকলে এই দিনে কবরস্থানে গিয়ে মোমের আলো ছড়িয়ে, ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাদের মৃত প্রিয়জনকে স্মরণ করেন আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া ক্যাথলিক খ্রিষ্টান কবরস্থানে চার শতাধিক পরিবারের লোকজন তাদের প্রিয়জনের কবরে মোমের আলো ছড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে, আগরের ঘ্রাণে কবরস্থানকে করে তোলে পূর্ণ পবিত্র ও স্নিগ্ধতাপূর্ণ পরিবেশ। নারী, পুরুষ, শিশুরা প্রত্যেকের হাতে মোমবাতি, আগরবাতি, ফুল ছিলো।
বিকাল ৪টায় কবরস্থানের প্রার্থনা বেদীতে বনপাড়া ধর্মপল্লীর প্রধান পাল-পুরোহিত ফাদার বিকাশ হিউবার্ট রীবেরুর পরিচালনায় খ্রিষ্টযাগ (বিশেষ প্রার্থনা) অনুষ্ঠিত হয়। খ্রিষ্টযাগ শেষে সকলে ধর্মীয় ভাবগম্ভির্যের মধ্য দিয়ে নিজ নিজ আত্মীয়-স্বজনের কবরে মোমের আলো জ্বালিয়ে দেয়। তিন শতাধিক কবরে সহস্র মোমের শিখায় প্রজ্বলিত রূপালী আলোয় কবরস্থান ঝলমল করে উঠে।
ফাদার বিজয় পেরেরা জানান, সপ্তম শতাব্দি সময়ে নরওয়ের সন্ন্যাশী আশ্রমে মৃতদের স্মরণে ও মৃতদের আত্মার শান্তিলাভে সন্ন্যাশীরা নিজেরাই এ চর্চা করতেন। পরে নবম শতাব্দিতে এসে সাধু বেনেডিক্ট ইটালীতে এর প্রচলন চালু করেন। এভাবে ১৪০০ শতাব্দিতে এর প্রচলনের আরো ব্যাপ্তি ঘটে এবং ১ম মহাযুদ্ধে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের স্মরণে ও আত্মার শান্তি কামনায় ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দে পঞ্চদশ পোপ বেনেডিক্ট সার্বজনীনভাবে ঘোষণা দেন প্রতি বছর ২ নভেম্বর ‘অল সোলস ডে’ বাংলায় ‘মৃত লোকের পার্বণ’ পালিত হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত তাফসীর