বরিশালে মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী ভারত উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় শশ্মান দিপাবলী উৎসব। দিপাবলী উৎসব ঘিরে গত কয়েক দিন ধরে নগরী কাউনিয়া মহাশ্মশানে সমাধীস্থল পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ধোয়া-মোছার কাজ করছেন স্বজনরা।
দিপাবলী উৎসবের শৃঙ্খলা রক্ষায় আয়োজক কমিটির শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে। উৎসব নির্বিঘ্ন করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জী কুডু জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস কালী পূঁজার আগের দিন অর্থাৎ ভূত চতুর্দশী তিথিতে পূঁজা অর্চনা করলে প্রয়াত স্বজনের আত্মা শান্তি লাভ করে। তাই প্রয়াতদের আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রয়াত প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করা হয় প্রয়াতের পছন্দের নানা ধরণের খাবার। সবকিছু করা হয় তিথি থাকা অবস্থায়। এছাড়া সমাধির পাশে মোমবাতি প্রজ্জলন করে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন স্বজনরা।
মানিক মুখার্জী আরো জানান, ৬ নভেম্বর রাতে লগ্ন শুরু হয়ে পরদিন রাত ১২টায় লগ্ন শেষ হবে। প্রতি বছর দেশ-বিদেশের স্বজনহারা মানুষ বরিশাল মহাশ্মশানে এসে প্রয়াত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দের আশা তিথির দিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বরিশাল মহাশ্মশানে।
মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি সূত্র জানায়, ৫ একর ৯৬ শতাংশ জমির উপর স্থাপিত মহাশ্মশানের পুরনো অংশের অধিকাংশ সমাধি ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনো সেখানে ব্রাক্ষ্মণদের ২/৩টি এবং রূপসী বাংলার কবি জীবনান্দ দাসের পিতা সত্যানন্দা দাস ও পিতামহ সর্বানন্দা দাস, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী মনোরমা মাসি মা, শিক্ষাবিদ কালি চন্দ্র ঘোষ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সমাধি রয়েছে। নতুন পুরনো মিলিয়ে মহাশ্মশানে ৬১ হাজারেরও বেশী সমাধি রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজারের অধিক পাকা, ১০ হাজার কাঁচা মঠ এবং ৮শ’ মঠ রয়েছে যাদের স্বজন এই দেশে নেই। সেইসব মঠগুলো হলুদ রং করা হয়েছে। স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্জলন করা হবে। ১৯২৭ সাল থেকে ওই স্থানে শ্মশান দিপাবলী উৎসব পালিত হয়ে আসছে। উপমহাদেশের মধ্যে এই মহাশ্মশানকে ঘিরে সবচেয়ে বড় শ্মশান দিপাবলী হয় বলে দাবী সনাতন ধর্মাবলম্বিদের।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন