রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে ধরা পড়ছে বিপুল পরিমাণ বড় মাছ। এসব মাছের মধ্যে কাতাল মাছের সংখ্যা বেশি। যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। তবে একই সাথে বড় মাছের তালিকায় রয়েছে- চিতল, রুই, বোয়াল, মৃগেল, কালিবাউশ, তেলাপিয়া, আইড়, পাঙ্গাশ, গজার ও শোল। আর এসুফল ভোগ করবে- জেলে, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, মৎস্যজীবীসহ ও এ অঞ্চলের মানুষ।
রাঙামাটির বনরূপা বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী নান্টু সরকার জানায়, সম্প্রতি কাপ্তাই হ্রদে বিপুল পরিমাণ বড় মাছ আহরিত হচ্ছে। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক। কাতাল মাছ বাজারে আসছে ২০ থেকে ৩০ কেজি পর্যন্ত । এছাড়া ১০থেকে ২০ কেজি মধ্যে- চিতল, মৃগেল, কালিবাউস, আইড় ও বোয়াল মাছ আসছে। আর রুই ও তেলাপিয়া মাছ মিলেছে সর্বাচ্ছ ৫ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত। এসব বড় মাছের চাহিদা অনেক। বড় মাছের এ উৎপাদন অব্যাহত থাকায় কাপ্তাই হ্রদের মৎস্যজীবিরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
রাঙামাটি বিএফডিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৪২টি প্রজাতির মাছ রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ থেকে বাণিজ্যিকভাবে আহরিত হচ্ছে। এ হ্রদে চাপিলা, তেলাপিয়া, কেচকি, মলা, কাটা মইল্যা, বাটা, ফলি, আইড়, গজার, শোল, সিলভার কার্প, গ্রাসকার্প, কার্পিও, রাজপুঁটি ও থাই পাঙ্গাশসহ বিদেশি প্রজাতির মাছের মধ্যে আফ্রিকান মাগুর ও তেলাপিয়া বেশ বিস্তার লাভ করেছে। যা বিগত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে আহরিত হচ্ছে।
অন্যদিকে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে হঠাৎ বড় মাছের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে চিহ্নত করা হয়েছে, মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন। যা চলতি বছরে গত মে-জুলাই পর্যন্ত হ্রদে মাছ শিকার বন্ধকালিন সময় সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছে রাঙামাটি বিএফডিসির কর্মকর্তারা।
এব্যাপারে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) ও রাঙামাটি জেলা ব্যবস্থাপক কমান্ডার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রতি বছর ৩ মাসের জন্য মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। সে সময়টা বিএফডিসি কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মাছগুলো বড় হতে থাকে এবং মা মাছগুলো সুষ্ঠু প্রাকৃতিক প্রজনন করতে পারে। তিন মাস পর এ সুফল ভোগ করে মৎস্যজীবিরা। তাই এখন হ্রদে বড় মাছ সংখ্যা বেড়েছে। এটা অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। কিন্তু কাপ্তাই হ্রদের সঙ্গে সংযুক্ত নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস ও পানির গভীরতা কমে যাওয়ার কারণে রুই জাতীয় মাছের প্রধান চারটি প্রজননস্থল (কাসালং চ্যানেল, মাইনিমুখ; বরকল চ্যানেল, জগন্নাথছড়ি; চেংগী চ্যানেল, নানিয়ারচর; রিংকং চ্যানেল, বিলাইছড়ি) নষ্ট হয়ে গেছে। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এসব চ্যানেল যদি স্বচল করা যায় কাপ্তাই হ্রদে আরও বেশি পরিমাণ বড় মাছের সংখ্যা ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার