১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০৯:৫১

চাঁদপুরে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর যুবকের 'আত্মহত্যা'

চাঁদপুর প্রতিনিধি

চাঁদপুরে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যার পর যুবকের 'আত্মহত্যা'

চাঁদপুর সদর উপজেলার দেবপুর গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার গভীর রাতে রামপুর ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামে সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সোমবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করে। তবে পুলিশ বলছে, এই মুহূর্তে হত্যার কারণ বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে। 

মৃতরা হলেন মাইনুদ্দীন (২৬), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (২৪) এবং তাদের দুই সন্তান মিথিলা (৫) ও সিয়াম (১)।মাইনুদ্দিন সরদার বাড়ির মিয়াজী সরদারের ছেলে। তিনি চট্টগ্রাম একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন।

মাইনুদ্দিনের মা ফিরোজা বেগম জানান, কয়েকদিন আগে মাইনুদ্দিনের স্ত্রীর কানের ধুল হারিয়ে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ দেখা দেয়। এরপরে মাইনুদ্দিন চট্টগ্রাম তার কর্মস্থলে চলে যায়। তার স্ত্রীকে তার পিতা এসে মতলব দক্ষিণ উপজেলার করবন্দ গ্রামে পিত্রালয়ে নিয়ে যায়। স্ত্রী কেন শ্বশুর বাড়িতে চলে গেছে এ নিয়েও মাইনুদ্দিন ও স্ত্রীর সাথে ফোনে কথা কাটকাটি হয়।

মাইনুদ্দিনের বড় ভাই কালাম সরদার জানান, শনিবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসে এবং শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে আসে। হারিয়ে যাওয়া স্বর্ণের গহনা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতেও স্ত্রী ও শ্বশুরের সাথে কথা কাটাকাটি হয়। 

সোমবার ভোর ৪টার দিকে মাইনুদ্দিনের আরেক ভাই জসিম উদ্দিন মালয়েশিয়া প্রবাসী মালয়েশিয়া থেকে তার মা ফিরোজা বেগমকে ফোন দেয়। মাকে বলে মাঈনুদ্দিন তার ফেইসবুকে সে মরে যাবে-তার কবর ঠিক করার জন্য এবং স্ত্রী, সন্তানদের ভিডিও করে ফেইসবুকে আপলোড দিয়েছে। এজন্য মা ও ভাইকে মাইনুদ্দিনের ঘরে গিয়ে দেখে আসতে পারে তাকে দেখার জন্য বলে প্রবাসী জসিম উদ্দিন।

পরে মা ফিরোজা বেগম ও ভাই কালাম সরদার ঘরে গিয়ে দরজা খুলে প্রথমে দুই শিশুকে লেপের নিচে মৃত পড়ে থাকতে দেখেন এবং মাইনুদ্দিনকে ঘরের আড়ার সাথে ফাঁস দেয়া ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। তারা চিকৎকার করলে বাড়ির লোকজন আসে এবং পরে খোঁজাখুঁজি করে বাড়ির পুকুরে খুঁটির মধ্যে ফাতেমার মরদেহ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পায়। ধারণা করা হচ্ছে, ফাতেমাকে বিষপান করিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনার পর চাঁদপুরে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নাছিম উদ্দিন জানান, মরদেহগুলোর সুরতহাল করা হয়েছে এবং উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই মুহূর্তে হত্যার কারণ বলা যাচ্ছে না। তবে তদন্ত শেষে ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে। 

বিডি-প্রতিদিন/১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর