দিনরাত এক করে বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনার কৃষকরা। কনকনে শীতের হাওয়া উপেক্ষা করেই ফসল ফলানোর খরচ কমাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাঠে নেমেছেন অনেক কৃষক। গত বছর আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবার আগাম জাতের ধান আবাদে আনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তবে শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় ইরি-বোরো আবাদে সেচ দিতে ডিজেলের দাম সহনীয় পর্যায় ও নিরবিচ্ছিন্নি বিদ্যুৎ পেলে এবারও লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তারা।
নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের একমাত্র ফসল বোরো ধান। যা থেকে বছরের পুরো আয় ব্যয় মিটিয়ে থাকেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। আর তাই কনকনে শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমি তৈরি করে চারা রোপন করছেন তারা। তবে বোরো মৌসুমে ব্যয় বেশি হওয়ায় কিছুটা হিমশিম খাচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তার উপর হাওর অঞ্চলসহ জেলা জুরেই রয়েছে মারত্মক শ্রমিক সংকট। যে কারণে জমি আবাদে ব্যয় গুনতে হয় কয়েকগুন। যার জন্য এবার স্কুল কলেজগামী সন্তানদের সাথে নিয়েই জমি আবাদ করছেন নিম্ন আয়ের কৃষকরা। এদিকে উন্নত জতের ধান আবাদে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়ার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ আরো জানায়, এ বছর জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লক্ষ ৯২ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে শুধুমাত্র হাওরাঞ্চালে ৩২ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপন প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে হাওরাঞ্চলে অল্প মাত্রায় সার প্রয়োগ ও কম সময়ে অধিক ফলনশীল ধান আবাদে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান।
অন্যদিকে বড়গাড়া এলাকার কৃষক আব্দুল জব্বার, নায়েব আলীসহ বেশক’জন জানান, কৃষি কর্মকর্তারা সময়মত মাঠ পরিদর্শন করেন না। ফলে কিছুটা ভোগান্তি হয় কৃষকদের। আমরা ডিজেল সার আর বীজ নিয়েই বেশি সময় বিপাকে থাকি। নিন্ম শ্রেণির কৃষকরা লবিং করতে পারে না বিধায় সময় পার হয়ে যায় ভালো বীজ পেতে। এর উপর রয়েছে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজী। যার জন্য সেচের অভাবে জমি হয় ক্ষতিগ্রস্থ। এসব ব্যাপারে সরকারের লোকজন এখনো আন্তরিক না হলে জমি আবাদ আস্তে আস্তে কমে যাওয়ায় একদিন দুর্ভিক্ষে পড়তে হবে আমাদের।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল