সড়কটিতে পাকা একটি সেতু ছিল। ওই সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন নিয়ে চলাচল করতো চারটি ইউনিয়নের ২০ টি গ্রামের মানুষ। পাঁচ বছর আগে বন্যার পানির তোড়ে সেতুটি নষ্ট হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় যানবাহন চলাচল। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই দফায় কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে। সাঁকোর উপর দিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করত। সাত তিন আগে সেই সাঁকোও ভেঙে যায়। বন্ধ হয়ে যায় মানুষের চলাচল। ওই জনদুর্ভোগের সেতুটি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের আলিবক্স মাদবরকান্দি গ্রামে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জাজিরা উপজেলা কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জাজিরা উপজেলা সদর থেকে পালেরচর বাজার ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ইটের সড়ক। যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে ওই সড়কের বড়কান্দি ইউনিয়নের আলিবক্স মাদবরকান্দি গ্রামে খালের উপর একটি পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়। তখন ওই সড়কটি ব্যবহার করে বড়কান্দি, পালেরচর, পূর্বনাওডোবা ও কুন্ডেরচর ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের মানুষ উপজেলা সদর ও জেলা সদরে যাতায়াত করা শুরু করে।
২০১৪ সালে বন্যার পানির তোরে সেতুটি ধ্বসে পড়ে। তখন যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পায়ে হেঁটে চলাচল করার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই স্থানে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করা হয়। ২০১৬ সালে সেটিও ভেঙে যায়। এর পর আবার বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি সংস্কার করা হয়। গত সাত দিন আগে সেই সাঁকোটি আবার ভেঙ্গে যায়। সেতুটি সংস্কার না করায় ওই ২০টি গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
আলিবক্স মাদবরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল মাদবর বলেন, সেতুটি ভেঙে গেছে পাঁচ বছর হলো, এখনো পূননির্মাণ বা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। অথচ এই সড়কটি দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। আমরা চরের মানুষ, কৃষক এই কারণেই কি এতো অবহেলা?
মুন্সিকান্দি গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, সেতুটি ভাঙা থাকায় চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। গ্রামের কৃষিপণ্য হাটবাজারে নেয়া যায় না। এ কারণে নায্যমূল্য হতে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি।
চেরাগ আলী সরদারকান্দি গ্রামের করিম হোসেন বলেন, একটি সেতুর কারণে সড়কটি অচল। পায়ে হাঁটা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। গ্রামবাসীর সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় অসুস্থ রোগী নিয়ে।
বড়কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন,এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য অনেক অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্ত এলজিইডির কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। দুই দফা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হয়েছিল। এখন উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল হতে কাঠের পোল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী বিমলেন্দু রায় বলেন, উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল হতে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে কাঠের একটি পোল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। সে অনুযায়ী টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার কাজ করছে না। ৩০ জুনের মধ্যে ঠিকাদার কাজ শুরু না করলে পুনরায়া সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা