নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিকের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়েছে। এছাড়াও ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে বিবাহের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে বর ও কনের পরিবারকে সতর্ক করে দিয়েছেন। আর বাল্যবিবাহ বন্ধ করে ওই স্কুলছাত্রীর লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশীপুর ইউনিয়নের দেওভোগ শেষ মাথার গাঙ্গুলী বাড়ি এলাকায় গিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন ইউএনও নাহিদা বারিক।
সূত্রে জানা যায়, ফতুল্লার দেওভোগ শেষ মাথার গাঙ্গুলী বাড়ি এলাকার ওই স্কুলছাত্রীর সাথে একই এলাকার ফরিদ মিয়ার ছেলে রমজান হোসেনের (১৮) বিয়ের আয়োজন করেন উভয়ের পরিবার। শুক্রবার তাদের বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন বিষয়টি। পরে তিনি কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম সাইফউল্লাহ বাদল ও ফতুল্লা থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে সেই এলাকায় মেয়ে ও ছেলের বাড়িতে হানা দেন। পরে ঘটনার খোজ খবর নিয়ে জানতে পারেন ছেলে ও মেয়ে কারোর বিয়ের বয়স হয়নি। ছেলে ও মেয়ের পরিবারকে এক সাথে করে বাল্যবিবাহ ভেঙ্গে দিয়ে মেয়ের ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দিতে সতর্ক করে দেয়া হয়। আর ইউএনও নাহিদা বারিকের কথা শুনে মেয়েকে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে বিয়ে না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন অভিভাবক।
ইউএনও নাহিদা বারিক বলেন, বাল্যবিবাহের সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়। আর তাদের বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন মেয়ের পরিবার। পরে খবর নিয়ে জানতে পারলাম মেয়ের পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। মেয়ের বাবা অটো রিকশা চালায় আর মা বাসায় বসে সেলাই কাজ করেন। তাই মেয়েকে লেখাপড়া করানোর জন্য উপজেলা প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েছে এবং মেয়ের মা জোবেদা বেগমকে একটি সেলাই মেশিন দেয়ার ঘোষণা করা হয়। আর মেয়ের পরিবারকে সরকারি বরাদ্ধকৃত প্রতি মাসে ৩ কেজি করে চাল দেয়ার কথা বলা হয়।
তিনি আরও বলেন, যেখানে বাল্যবিয়ে হবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বাল্যবিয়ে রোধে প্রতিটি এলাকায় গণসচেতনা তৈরি করতে হবে। বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম