ফরিদপুর শহরের আলীপুর এলাকায় মধ্যযুগীয় কায়দায় এক গৃহবধূকে নির্যাতন করেছেন পাষণ্ড স্বামী। গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া করে চালানো হয় ভয়াবহ নির্যাতন।
শরীরের বিভিন্ন অংশে লোহার রড ও হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করার পাশাপাশি দেওয়া হয় আগুনের ছ্যাঁকা। পরে অসুস্থ ওই গৃহবধূকে এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘোরানো হয়।
নির্মম ও লোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুর শহরের আলীপুর শাপলা সড়ক এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, বিগত কয়েক মাস আগে রথখোলা এলাকার জনৈক মিলন সরদারের কন্যা বৃষ্টি বেগমকে (২৩) বিয়ে করেন আলীপুর এলাকার মো. মাহবুব। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য বৃষ্টির উপর নানা নির্যাতন নেমে আসে। নির্যাতনের কারণে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে বৃষ্টি। আর নির্যাতন করবে না বলে এর আগে তিনবার সে বৃষ্টিকে তার কাছে নিয়ে আসে।
এদিকে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বৃষ্টির ওপর নির্মম ও ভয়াবহ নির্যাতন চালায় মাহবুব। শরীরের বিভিন্ন অংশে দেওয়া হয় আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা। এছাড়া লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। একপর্যায়ে নির্মম নির্যাতন শেষে বৃষ্টিকে এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘোরানো হয়। পরে তাকে ফরিদপুর শহরের বাইরে জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে একটি বদ্ধ ঘরে আটকে রাখা হয়।
এদিকে বৃষ্টির কোনো খোঁজ না পেয়ে শনিবার বিকেলে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি ডায়েরি করা হয়। পরবর্তীতে শনিবার সন্ধ্যায় রথখোলার একটি বাড়ি থেকে বৃষ্টিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এসময় আটক করা হয় বৃষ্টির স্বামী মাহবুবকে। পরে মারাত্মক আহত অবস্থায় বৃষ্টিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গৃহবধূ বৃষ্টি জানায়, মাথার চুল কেটে দেবার পর তাকে কয়েক দফায় লোহার রড ও হাতুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পেটানো হয়।
বৃষ্টির এমন অবস্থা দেখে তার স্বজনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ নির্মম নির্যাতনের জন্য স্বামী মাহবুবের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, গৃহবধূটির ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামী মাহবুবকে আটক করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন