২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০২:২৫

যুবকের হাত কেটে নেওয়া সেই চেয়ারম্যান গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

যুবকের হাত কেটে নেওয়া সেই চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে তুলে নিয়ে গিয়ে যুবকের কব্জি কেটে নেওয়ার ঘটনায় উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তার সহযোগী তারেক আহমেদকেও গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে সদর উপজেলার আমনুরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম।

তিনি জানান, রুবেল হোসেনেরর কব্জি কেটে নেওয়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত চেয়ারম্যানসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রাতে উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমদ (৩৫) ও তার প্রধান সহযোগী তারেক আহমেদকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়। এর আগে দুপুরে চেয়ারম্যানের আরো দুই সহযোগী জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) ও আলাউদ্দিনকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়েছিল।

পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম, রাতে নওগাঁ পালিয়ে যাবার সময় সদর উপজেলার আমনুরায় পুলিশের চেক পোস্টে মূল আসামি উজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমদসহ তার অপর আরেক সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। রুবেলের উপর হামলার পর থেকেই পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালাচ্ছিল।

কব্জি হারানো রুবেল হোসেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। রুবেল শিবগঞ্জ উপজেলার নয়ালাভাঙ্গা গ্রামের খোদা বক্সের ছেলে। বুধবার গভীর রাতে রুবেলকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাতের কব্জি কেটে ফেলে ফয়েজ আহমেদের লোকজন। ফয়েজ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তিনি চেয়ারম্যার নির্বাচিত হন।

দুই হাতের কব্জি হারানো রুবেল জানান, শিবগঞ্জের উজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফয়েজ উদ্দিনের সঙ্গে নদীর ঘাট নিয়ে তার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে তাকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাতের কব্জি কেটে দিয়েছে।

রুবেলের চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সালাম বলেন, বুধবার রাতে রুবেল তার দুই বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি আসছিলেন। এ সময় শিবগঞ্জের উজিরপুর বেড়ি বাঁধের কাছে কয়েকজন তাদের পথ রোধ করেন এবং পাশেই চেয়ারম্যান ফয়েজের চেম্বারে গিয়ে দেখা করতে বলেন। রুবেল বন্ধুদের নিয়ে চেম্বারে গেলে, তার দুই বন্ধুকে সেখানে আটকে রাখা হয়। আর রুবেলের মুখ ও চোখ গামছা দিয়ে বেঁধে পদ্মা নদীর বাঁধের নিচে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে নির্যাতন করে তার দুই হাতের কব্জি কেটে নেন চেয়ারম্যানের লোকজন। রাত ১টার দিকে খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আব্দুস সালাম আরো জানান, ফেরি ঘাট নিয়ে চেয়ারম্যান ফয়েজের সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে। এমপি ও তার ভাইয়ের মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষ মিলে মিশে ঘাটটি চালাচ্ছিল। কিন্তু কিছুদিন ধরে ফয়েজ ফেরি ঘাটটি পুরো নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাচ্ছিলেন। এর জের ধরেই তার লোকজন রুবেলের দুই হাতের কব্জি কেটে নিয়েছেন।


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর