মানিকগঞ্জে এক আইনজীবী তার স্বামীর হাতে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। মেয়েকে প্রতিদিন মারধর, মানসিক নির্যাতন ও হত্যার হুমকি দিয়ে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ্য করা হয়েছে, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগরে গ্রামের মো. শাওন মিয়ার সাথে সেতুর পরিচয় হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর শাওন তাকে ১০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করে। আর বিয়ের কথা কাউকে বলতে নিষেধ করে। ১৭ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জজকোর্ট থেকে কথা আছে বলে শাওন তাকে তার প্রাইভেট কারে উঠিয়ে নবীনগরের একটি বাড়িতে স্ত্রী হিসেবে রাখে। সেখানে প্রথম দুদিন তার সাথে ভাল ব্যবহার করে। ৩য় দিন তার মানিকগঞ্জ ডাকঘরে থাকা কয়েকটি হিসেব থেকে সেতুকে টাকা উঠিয়ে দিতে বলে। অস্ত্রের ভয়ে তিনি তাকে ৫ লাখ, ১০ লাখ এবং ১ লাখ করে ৩ বার টাকা উঠিয়ে দিতে বাধ্য হন। আরো টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। তার কাছে সঞ্চিত টাকা নেই জানালে শাওন তাকে তার নামে থাকা জমি লিখে দিতে বলে। জমি লিখে না দেয়ায়, তার ওপর শুরু হয় অমানষিক নির্যাতন। শিল-পাটার দিয়ে সেতুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে থেতলে দেওয়া হয়। সেতুর কাছ থেকে মোবাইর ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতিয়ে নেয় শাওন। তার পর তাকে বিবস্ত্র করে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে তাকে মারধর শুরু করলে তার আর্তচিৎকারে প্রতিবেশীরা চলে আসে। পরের দিন সেতুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায়। চিকিৎসার নামে একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে শাওন।
এটা বুঝতে পেরে সেতু সেখানে থেকে চলে আসতে চাইলে তাকে সেখানে মারধর শুরু করে। এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দিলে সেখান থেকে শাওন পালিয়ে যায়। সেখান থেকে সেতুকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ নিয়ে আসা হয়।
আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতু বলেন, ও প্রতিদিন আমাকে মারতো। পাটার পুতা (শিলপাটা) দিয়ে আঘাত করতো, যাতে কেউ মারধরের আওয়াজ না পায়। আমার সারা শরীর থেঁতলে গেছে ওই আঘাতে। আঘাতের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আত্মহত্যার। কিন্তু সেই সুযোগও পায়নি। আমি সেখান থেকে জীবিত ফিরে আসতে পারবো সে আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।
মানিকগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান বলেন, আসামিকে ধরতে জোর চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা