নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় আবারও এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এবার উপজেলার দক্ষিণ চর মজিদ আশ্রয়ন কেন্দ্রে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ওই নারী।
গত শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সন্ত্রাসীরা ওই নারীর বসত ঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে সব নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে এবং শনিবার বিকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। রাতে হাসপাতালে নির্যাতিতা ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আলামত সংগ্রহ করেন চিকিৎসক।
হাসপাতালে নির্যাতিতা নারী জানান, তার দাদি শাশুড়ির মৃত্যুর কারণে স্বামী বাড়িতে ছিল না। তিনি ঘরে একা ছিলেন। রাত প্রায় দেড়টার দিকে ৯ জন দরজা ভেঙে তার ঘরে ঢুকে। তাদের হাতে দেশীয় বেশ কিছু অস্ত্রও ছিল। এ সময় তিনি চিৎকার দিলে অস্ত্র দেখিয়ে একজন মুখ চেপে ধরে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে পাঁচজন পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে এবং তার গলায় ও কানে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। এ সময় তাকে মারধরও করে তারা। তিনি ধর্ষণকারী ও হামলাকারীদের সকলকে চেনেন। তারা এলাকার সন্ত্রাসী বলেও জানান।
ওই নারী আরও জানান, রবিবার তার দেবরের জামিন চাওয়ার জন্য ঘরে ২০ হাজার টাকা রাখা ছিল। ধর্ষকরা টাকাগুলোও নিয়ে যায়। এ সময় তারা ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র তছনছ করে এবং ঘরের বেড়া কুপিয়ে ও পিটিয়ে ভাঙচুর করে। ঘরের বাহিরে থাকা দুটি বৈদ্যুতিক লাইট খুলে অন্ধকার করে চলে যায়। ধর্ষকদের তাণ্ডবের আওয়াজে আশপাশের লোকজন আসলেও ভয়ে কেউ তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেনি। এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
নির্যাতিতাকে উদ্ধারকারী প্রতিবেশী এক নারী জানান, সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর নির্যাতিতাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন তারা। পরে শনিবার বিকালে তাকে প্রথমে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় থানা পুলিশের পরামর্শে বিকালে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।
তিনি আরও জানান, পুরো আশ্রয়ণ কেন্দ্রের আতঙ্ক ওই দুষ্কৃতকারীরা। তারা আশ্রয়ণের মানুষকে জিম্মি করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দ্বারা ওই আশ্রয়ণ কেন্দ্রের একাধিক নারী এর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
এ বিষয়ে চরজব্বার থানার ওসি সাহিদ উদ্দিন ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নির্যাতিতাকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/ফারজানা/মাহবুব