চলতি বছর পিয়াজের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বগুড়ার সোনাতলায় মাঠ থেকে একের পর এক পিয়াজ চুরির ঘটনা ঘটছে। পিয়াজ চুরি রোধে ওই উপজেলার কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পিয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন।
বিশেষ করে যমুনা নদীর চরাঞ্চলের কৃষকেরা জমিতে পলেথিন দিয়ে কুঁড়ে ঘর তৈরি করে সেখানে রাত্রিযাপন করছেন। কৃষকদের চোখে ঘুম নেই, অপেক্ষায় রয়েছে জমিতে উৎপাদিত পিয়াজ বাজারে বিক্রি করে নগদ অর্থ ঘরে তুলতে। সেই সাথে চোরের হাত থেকে পিয়াজের ক্ষেত রক্ষা করা।
বগুড়ার সোনানতলা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে প্রায় ২৫০ হেক্টর জমিতে কৃষক পিয়াজ বপন করেছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবার পিয়াজের ফসল বাম্পার ফলনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ আহমেদ জানান, কৃষক দুই পদ্ধতিতে পিয়াজ চাষ করে থাকে। এর একটি হচ্ছে বীজ বপণের মাধ্যমে অপরটি চারা রোপনের মাধ্যমে। বীজ বপন থেকে আড়াই তিন মাসের মধ্যে কৃষক পিয়াজ উত্তোলন করতে সক্ষম হয়। আর চারা রোপনের মাধ্যমে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে পিয়াজ উত্তোলন করতে পারে।
সরজমিনে উপজেলার সরলিয়া, খাবুলিয়া, মহব্বতেরপাড়া, আউচারপাড়া, ভিকনেরপাড়া, জন্তিয়ারপাড়া, খাটিয়ামারী, শিমুলতাইড়, দিঘলকান্দী, নওদাবগা, কর্পূর, মূলবাড়ী, ফাজিলপুর, মহিচরণ, বালুয়াহাট, মধুপুর, হরিখালী, পাকুল্লা, চারালকান্দি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি এলাকায় কৃষক জমি থেকে পিয়াজ চুরি রোধে পলেথিন দিয়ে ঘর বেঁধে পিয়াজের জমিতে রাত জেগে পিয়াজ পাহারা দিচ্ছে।
বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার নওদাবগা এলাকার সোনাউল্লা জানান, এবার তিনি ২ বিঘা জমিতে পিয়াজ চাষ করেছেন। ইতোমধ্যেই ১০ শতক জমির পিয়াজ বাজারে বিক্রি করে তিনি ৬০ হাজার টাকা উপার্জন করেছেন।
খাবুলিয়া এলাকার শামছুল হক জানান, এবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে পিয়াজ রোপন করেছেন। ইতোমধ্যেই তিনি দেড় বিঘা জমির পিয়াজ বিক্রি করে প্রায় লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করেছেন। এদিকে ওই উপজেলার কৃষকেরা জানান, প্রতি রাতেই কোন না কোন এলাকায় পিয়াজ চুরির ঘটনা ঘটছে।
সম্প্রতি উপজেলার মধ্যদিঘলকান্দী এলাকার এক কৃষকের দুই শতক জমির পেঁয়াজ চুরি করে নিয়ে গেছে সংঘবদ্ধ চোরের দল। এদিকে খাবুলিয়া, জন্তিয়ারপাড়া ও আউচারপাড়া চরের ৬ জন কৃষকের জমি থেকে বুধবার দিবাগত রাতে পিয়াজ চুরি ঘটনা ঘটে।
এদিকে, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার বিভিন্ন হাটে বাজারে পুরাতন পিয়াজ আড়াইশ’ টাকা ও নতুন পিয়াজ দেড় থেকে ১৮০ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং না থাকায় এক শ্রেণির মুনাফালোভী পিয়াজ ব্যবসায়ী পিয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ফায়দা লুটছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর পিয়াজের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির কারণে জমি থেকে পিয়াজ চুরির ঘটনা ঘটছে বলে সচেতন মহল জানান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন