একদিকে যেমন করোনার প্রকোপ তার উপর কৃষকের ধান ক্ষেতে ‘লেট ব্লাইট’ এর হানা, দুই মিলে যেন মরার উপর খরার ঘা। ঘাম ঝড়ানো বোরো ধানের ক্ষেতে ছত্রাকজনিত ‘লেট ব্লাইট’ হানা কোনো ভাবেই মানতে পারছেন না লালমনিরহাট জেলার চাষিরা। বিশেষ করে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের মধ্যে যারা ঋণ নিয়ে বোরো ধান চাষ করেছেন তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। পাকা ধানে পোকার আক্রমনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে এ জেলার কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লালমনিরহাট সদরের বড়বাড়ী কুলাঘাট, মহেন্দ্রনগর, আদিতমারীর ভাদাই, ভেলাবাড়ী, কালীগঞ্জের চর বৈরাতি, শিয়ালখোওয়া, শ্রীখাতা দলোগ্রাম হাতিবান্ধার গড্ডিমারী, বড়খাতাসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠে ব্রি-২৮ জাতের বোরো ক্ষেতে লেট ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এতে করে ধানক্ষেতগুলো সোনালি রঙ ধারণ করলেও তার শীষ মারা যাচ্ছে। ধানের শীষ চিটা হয়ে গেছে।
যে সময় বোরো ধান কেটে ঘরে তোলার কথা ঠিক সেই মুহূর্তে লালমনিরহাটের বিভিন্ন স্থানে ফসলি জমিতে দেখা দিয়েছে এ রোগ। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। যে কারণে হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় এ মৌসুমে ৪৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন ধান।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শামীম আশরাফ জানান, কিছু কিছু এলাকায় বোরো ক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগ দেখা দিয়েছে। যদিও এটার পরিমাণ খুবই কম, তবে এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কীটনাশক ছিটিয়ে কোনো ফল আসে না। খেতের কোনো অংশে লেট ব্লাইট দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ওই অংশের ধানের গাছ উপড়ে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল