করোনা সঙ্কটে দেশজুড়ে মানুষের মাঝে যখন অস্বস্তি বিরাজ করছে ঠিক তখনি নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলের মানুষ খুঁজে বের করেছে অন্যরকম বিনোদন। আর সেই বিনোদনের প্রকাশ ঘটেছে গ্রাম থেকে শহরেও।
করোনা সঙ্কটে নিজেদের আনন্দে রাখতে ঘুড়ি উৎসবে মেতে উঠেছেন জেলার নানা বয়সী ঘুড়িপ্রেমীরা। শিশু থেকে তরুণ যুবা এমনকি মাঝ বয়সীরাও। দিনের সাথে সাথে এখন রাতের আকাশেও যুক্ত হয়েছে নানা রঙের ডিজিটাল ঘুড়ি। আর রাতের আকাশে এসকল ঝলমলে ঘুড়ি দেখতে পেয়ে মুগ্ধ হচ্ছেন স্থানীয়রা।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনার ভয় উপেক্ষা করেই দিনে রাতে ছোট-বড় নানা বয়সী ঘুড়িপ্রেমীরা মেতেছেন এই উৎসবে। কিশোর, যুবকদের বাজার বিমূখ করতে বিনা পারিশ্রমিকে অসংখ্য ঘুড়ি বানিয়ে দিয়েছেন জেলা সদরের এক চা বিক্রেতা শান্তু মিয়া।
বর্তমানে এই ঘুড়ির চাহিদা বাড়তে থাকায় ৪০০ থেকে ৫০০’র মত টাকা প্রতি ঘুড়িতে খরচ করেও ঘুড়িপ্রেমীরা ছুটছেন কারিগড়দের বাড়ি বাড়ি। প্রতিদিন আকাশে দিন থেকে রাত অব্দি উড়ছে এসকল ডিজিটাল রঙ্গিন ঘুড়ি।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার লক্ষীগঞ্জ ইউনিয়নের গদাইকান্দি গ্রামের চা বিক্রেতা শান্ত মিয়া। করোনা মোকাবেলায় লকডাউন চলাকালে তিনি ছেলেকে বাজার বিমুখ করতে বাড়িতে রাখতে নিজ হাতে একটি ডিজিটাল ঘুড়ি বানিয়ে দেন।
মাস্টার্স পড়ুয়া ছেলে মোবারকের ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখে স্থানীয় অনেকেই শান্তু মিয়ার বাড়িতে এসে বায়না করে ঘুড়ি বানিয়ে দিতে। এরপর থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পরে রঙ্গিন ঘুড়ি উড়ানো উৎসব। করোনা সময়ে কিশোর যুবকদের বাজার বিমূখ করতে প্রথমে বিনা পারিশ্রমিকেই ডুল ঘুড়ি, ঘর-ঘুড়িসহ বিভিন্ন নামের অসংখ্য ঘুড়ি বানিয়ে দিয়েছেন শান্তু মিয়া।
বর্তমানে জেলার মদনপুরসহ বেশ কয়েকজন ঘুড়ি বানানোর ব্যবসা করছেন করোনায় জমজমাট। আর এই ঘুড়ি বানাতে এখন ৪ থেকে ৫ শ টাকার মতো সব মিলিয়ে খরচ হয় বলে জানান অনেকেই।
জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক গ্রামেই ছোট-বড় সব বয়সীরাই মেতেছেন এই উৎসবে। এগুলো দেখে এই করোনা সময়ের মাঝেও কিছুটা বিনোদন উপভোগ করে মুগ্ধ হচ্ছেন স্থানীয়রা।
প্রথম ডিজিটাল ঘুড়ির প্রবর্তক শান্তু মিয়া জানান, এ পর্যন্ত তিনি একাই বানিয়েছেন তিন শতাধিক ঘুড়ি। মূল উদ্দেশ্যই ছিল লকডাউন। এই করোনাকালে ঘরেও থাকলাম সময়ও কাটলো। এখন দেখছি মানুষ এটিতে ভীষণ মজা পেয়ে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম