সড়কের মাঝে পড়ে থাকা মরা গাছটি হঠাৎ চোখে ভেসে উঠলে আঁতকে যান পথচারীরা। গাছের নাম বৃষ্টি গাছ। গত মে মাসের ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে মরা এই বৃষ্টি গাছটি পড়ে যায় সড়কে। এরপর থেকেই ব্যস্ততম সড়কের বুকে এই বিশাল আকৃতির গাছটি যেন শুয়ে আছে। আর এতে বিঘ্ন ঘটছে যান চলাচলে। নেত্রকোনার দুর্গাপুরে চন্ডীগড় ইউনিয়নের বাজারের সামনে ব্যাস্ততম সড়কের মাঝে চোখে পড়ে এই চিত্র।
গত প্রায় দুই মাসের মতো সময় ধরে এভাবেই গাছটি পড়ে থাকলেও সরানোর কোনো উদ্যোগই চোখে পড়েনি বলে জানান স্থানীয়রা। যে কারনে দুর্ঘটনা ঘটার একটি শঙ্কা সব সময় তাদের মাঝে কাজ করে বলেও জানান তারা।
চলতি বছরের ১৮ ই মে সুপার সাইক্লোন আমফানের প্রভাবে লন্ডভন্ড হয় দেশের উপকূলীয় অঞ্চল। এর প্রভাবে সারাদেশে ঝড় বৃষ্টি হয় প্রচুর। এই সময় ঝড়ে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতির সাথে ভেঙ্গে পড়ে চন্ডিগড় বাজারে বিশাল আকৃতির এই বৃষ্টি গাছটিও ।
এরপর দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো ঠিক একই জায়গায় পড়ে রয়েছে গাছটি। গাছটি কে সরাবে এই নিয়ে যেন প্রশ্নের শেষ নেই স্থানীয়দের মাঝে। সরকারী গাছ তাই ভয়ে এগিয়ে আসেন না কেউ ।
এদিকে, দুর্গাপুর-কমলাকান্দার অভ্যন্তরীণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করে আসছে। জীবিকার তাগিদে চলছে ট্রাক-বাস, মিনিবাস অটোরিকশা মোটরসাইকেলসহ শতশত যানবাহন। কিন্তু সড়কের মাঝেই মৃত গাছটি পড়ে থেকে প্রায়ই দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হচ্ছে চালক ও পথচারীদের।
স্থানীয় চালকদের গাছটি নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেলেও বিপত্তিতে পড়তে হয় অপরিচিত চালকদের। বিশেষ করে দ্রুত গতির মোটরসাইকেলে ঘটছে প্রায়দিনই অনেক ছোট বড় দুর্ঘটনা।
অথচ এই সড়ক দিয়ে পথচারী ছাড়াও প্রতিদিনই প্রশাসনের শতাধিক কর্মকর্তার যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু এটিকে দেখেও এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। ফলে যত দিন যাচ্ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের মনে ক্ষোভ।
পরিচয় গোপন রেখে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানায়, বিষয়টি বারবার ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হলেও তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। অথচ তাদেরও এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয়। আমরা স্থানীয়রাও এক ধরনের আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করে থাকি কখন কি হয়ে যায়। আমাদের দাবি দ্রুতই সড়কের মাঝখান থেকে গাছটির সরিয়ে অন্যত্র কোন জায়গায় রাখুক ।
এ ব্যাপারে চন্ডিগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলতাবুর রহমান কাজল জানান, রাস্তাটি এলজিইডির আওতাভুক্ত। তাই একাধিকবার এলজিইডি কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়েও আসছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। সরকারি গাছ তাই আমরাও গাছটি ধরতে পারছিনা।
এদিকে এলজিইডির উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আলিম জানান, রাস্তাটি আমাদেরই তবে রাস্তার উপর গাছ পড়ে থাকার বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।
দ্রুত সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে যাতে যাত্রীসাধারণ ও যানবাহনগুলো নিরাপদে চলাচল করতে পারে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ সিফাত