কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে দিনাজপুরের অনেক খামারি লাভবানের আশায় বিভিন্ন জাতের পশু প্রাকৃতিক উপায়ে মোটাতাজাকরন প্রক্রিয়ায় পালন করে বড় করেছে। শাহ-নেওয়াজ, জাকারিয়া, আকবর আলীসহ অনেক ছোট-বড় খামারি কয়েকটি উন্নত জাতের ষাঁড় বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছে। এসব বড় জাতের ষাঁড়ের বিভিন্ন নামও তারা রেখেছে এবং দেখতে উৎসুক মানুষ ভিড় করছে খামারে।
কিন্তু করোনার এই সময়ে কোরবানির জন্যে এসব বড় জাতের পশু বিক্রি নিয়ে চিন্তিত খামারিরা। সঠিক মূল্য না পেলে ক্ষতির আশংকা করছেন তারা।
ঘোড়াঘাটের পৌরসভার বড় গলি (মেলার বাগান) এলাকায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রায় ৩১ মণ ২২ কেজি ওজনের ‘বস’ নামের এক ষাঁড়কে দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছেন। দিনাজপুরের ‘বস’কে করেছেন ঘোড়াঘাট পৌরসভার বড় গলি এলাকার শাহ-নেওয়াজ। তার প্রতিষ্ঠিত 'নেচার ফ্রেশ ডেইরি ফার্মে' এ ষাঁড়টি রয়েছে। খামারের মধ্যে গরু রাখার জন্য চারটি সেড রয়েছে। সেডগুলোতে হোলস্টাইন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুসহ অন্যান্য জাতের ছোট-বড় মিলে ৭০টি গরু রয়েছে। গরুগুলোকে দেখাশোনার কাজে রয়েছে ১০ জন শ্রমিক। আলাদা সেডে গলায় রশি ও দু’পাশে টানা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে একটি বিশাল আকৃতির ‘বস’কে।
তার খামারের একটি গাভি থেকে জন্ম নেয়া কালো চামড়ার এই ষাাঁড়টির বয়স ৪ বছর। লম্বায় ৭ ফিট ৬ ইঞ্চি। ষাড়টিকে ১২০ লিটার পানি, ২০ কেজি খড় ও ১২ কেজি দানাদার খাদ্য খাওয়ানো হয়। এবারের ঈদে ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুটি দাম হাকা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা।
নবাবগঞ্জ উপজেলার মতিহারা গ্রামের এক দর্শনার্থী উজ্জল বলেন, সোসাল মিডিয়ায় এই গরুটি দেখার পর ফার্মে এসে দেখে মনে হলো শুধু দিনাজপুরে নয়, আশেপাশে জেলাগুলোর মধ্যে এ ষাঁড়টি হয়তো বড়। শান্ত হলেও আচরন তার বশের মতোই।
২০১৩ সালে দুই লাখ টাকা পুঁজিতে মাত্র দু'টি গরু কেনার মধ্যে দিয়ে বিদেশি গরু পালন শুরু করে তার ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। গড়ে তুলেছেন দুগ্ধজাত গরুর খামারও। যা থেকে অনুপ্রেরণা পাচ্ছে শত শত যুবক। নিজের বাড়িতে গড়েছেন ‘নেচার ফ্রেশ ডেইরি ফার্ম’।
এ ব্যাপারে খামার মালিক শাহ-নেওয়াজ বলেন, করোনাকালে দিনাজপুর জেলাতে এত বড় ষাঁড় পাওয়া দুষ্কর। দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ী এই গরুটি দেখতে আসেন। এ পর্যন্ত গরুটির দাম উঠেছে ৯ লাখ টাকা। তবে তিনি আশা করেন, কমপক্ষে ১২ লাখ টাকায় বিক্রি হবে। কিন্তু করোনাসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমানে দাম কম হওয়ায় আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রুমানা আকতার রোমি বলেন, কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে বিভিন্ন খামারে কোরবানি যোগ্য গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। নেচার ফ্রেশ ডেইরি ফার্মে দিনাজপুরের ‘বস’ নামে এ ষাঁড়টি নজর কাড়ার মত।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ