টাঙ্গাইলের সখীপুরে চারটি ইউনিয়ন পরিষদে আগামী ১১ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে কোনো বিরোধী দল অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিজয় অনেকটা নিশ্চিত ছিল। কিন্তু ভোটের মাঠে প্রতিটি ইউনিয়নেই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের আভাস পাওয়া গেছে। আর এতে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগ।
বিরোধী দল অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা মনে করেছিল এবারের ইউপি নির্বাচন জন্য তাদের জেতা সহজ হবে। তিন ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান ও একটিতে আওয়ামী লীগের সভাপতিকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। দলের কঠোর অবস্থানের কারণে বিদ্রোহীদের নিয়েও তেমন কোনো শঙ্কা ছিল না। মনোনীত প্রার্থীরাও মনে করছিলেন এমন কঠোরতার মধ্যে কেউ বিদ্রোহী হওয়ার সাহস দেখাবে না। ফলে মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে পারলেই নিশ্চিত জয়।
কিন্তু মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে পাল্টে গেছে হিসাব-নিকাশ। চার ইউপিতেই রয়েছে শক্তিশালী বিদ্রোহী প্রার্থী। কোনো কোনো ইউনিয়নে একাধিক বিদ্রোহীও রয়েছে। এ ব্যাপারে সখীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শাকিল আনোয়ার বলেন, সখীপুরে আওয়ামী লীগের অবস্থান ভালো। তবে প্রতিটি ইউপিতেই শক্তিশালী ও একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় যেকোনো সময় ভোটের হিসাব পাল্টে যেতে পারে। এমনকি তীরে এসেও ডুবে যেতে পারে আওয়ামী লীগের তরি।
চারটি ইউপিতে সরেজমিন দেখা গেছে, চারদিকে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। চারটি ইউপিতেই বিদ্রোহীরা দাপটের সঙ্গে মাঠ দাপাচ্ছেন। কাঁকড়াজান, বহেড়াতৈল, যাদবপুর ও বহুরিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে মূলত নিজ দলের বিদ্রোহীরাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কাঁকড়াজান ইউপিতে নৌকার প্রার্থী তারিকুল ইসলাম বিদ্যুতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিদ্রোহী প্রার্থী মো. দুলাল হোসেন।
বহেড়াতৈল ইউপিতে মো. ওয়াদুদ হোসেনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম ফেরদৌস। যাদবপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে এম আতিকুর রহমান আতোয়ারের প্রতিদ্বন্দ্বী ওই ইউনিয়নের সাবেক এবং জনপ্রিয় চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুর রহমান বাবুল। বহুরিয়া ইউপিতে গোলাম কিবরিয়া সেলিমের প্রতিদ্বন্দ্বী বৃহত্তর যাদবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরকার নূরে আলম মুক্তা ও আওয়ামী লীগ নেতা চলচ্চিত্র পরিচালক নিরাঞ্জন বিশ্বাস। পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে পাঁচ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
এছাড়া দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা গ্রামগঞ্জে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। প্রচারে পিছিয়ে নেই বিদ্রোহীরাও। পাশাপাশি চলছে সংরক্ষিত নারী ও সদস্য পদের প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শওকত শিকদার বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিদ্রোহী প্রার্থীদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে নেতা কর্মীরা মাঠে কাজ করছেন। আশা করি আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীদেরই বিজয় হবে।
নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিত্রা শিকারী বলেন, উপজেলার চারটি ইউনিয়নই নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণ ভোটাররা তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর