দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর কুষ্টিয়ার দুটি উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় ১১টি ইউনিয়নে এবং ভেড়ামারা উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মিরপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।
এছাড়াও মিরপুরের ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টি ইউনিয়নে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) দলীয় প্রার্থী দিয়েছে। ভেড়ামারা উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে।
এছাড়াও বিএনপির দুই জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মিরপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং ভেড়ামারা উপজেলায় ২৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মিরপুর উপজেলায় বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। উপজেলার বহলবাড়িয়া ইউনিয়নে গত ২৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের উপর জাসদ প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের হামলার ঘটনায় অন্তত ১০ আওয়ামী লীগ কর্মী আহত হয়েছেন। তবে ভেড়ামারা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে।
আমবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মুকুল, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আমবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারী টুটুল, এছাড়াও স্বতন্ত্র আরিফ আহমেদ এবং জাসদ’র প্রার্থী হয়েছেন মশিউর রহমান মিলন।
আমলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি একলিমুর রেজা সাবান, এখানে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সেন্টু ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আসাদুজ্জামান সুমন, জাসদের প্রার্থী রাজিয়া পারভিন রানী এবং স্বতন্ত্র রোকেয়া খাতুন।
কুর্শা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হান্নান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কুর্শা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহন লাল, জাসদের ওমর আলী এবং স্বতন্ত্র মনোয়ার হোসেন।
ছাতিয়ান ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তাছের আলী, বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা কবির বিশ্বাস, জাসদ থেকে আব্দুল জলিল রতন ও সাম্যবাদী দল থেকে কমরেড বাহালুল ইসলাম লেলিন।
তালবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌসিফ আহম্মেদ সোহান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তালবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হান্নান মন্ডল।
বহলবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সাইদুল, স্বতন্ত্র সোহেল রানা, বিপুল হোসেন এবং মওদুদ আহমেদ রাজিব, জাসদ প্রার্থী সাইদুর রহমান মন্টু।
বারুইপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মন্টু, জাসদের সাইদুর রহমান ও স্বতন্ত্র মাহাবুল ইসলাম।
মালিহাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেন, দলের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন, স্বতন্ত্র নুহু মিয়া এবং আনোয়ারুল ইসলাম এবং জাসদের আব্দুল হামিদ।
ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাহার আলী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম, জাসদের মিজানুর রহমান ও স্বতন্ত্র জব্বার রিগ্যান।
পোড়াদহ ইউনিয়নে মহিলা আওয়ামী লীগ মিরপুর উপজেলা শাখার সভানেত্রী শারমিন আক্তার নাসরিন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা কৃষক লীগের সদস্য ইব্রাহীম খলিল ও উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ পলাশ, জাসদের ফারুকুজ্জামান জন এবং স্বতন্ত্র আল আমিন হোসেন ও আবু আজম।
সদরপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল হক, জাসদের হাফিজুর রহমান এবং স্বতন্ত্র রাশিদুল ইসলাম, জমির উদ্দিন ও আশরাফুল ইসলাম।
দ্বিতীয় ধাপে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে আগামী ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচনে ২৪ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬ জন, আওয়ামী লীগের (৩ জন বিদ্রোহীসহ), বিএনপির ২ জনসহ স্বতন্ত্র ৮ জন, জাসদের ৬ জন প্রার্থী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন রওশন আরা। এখানে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের দলীয় প্রার্থী হয়েছেন আবু হাসান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হয়েছেন সাইফুল আলম। চাঁদগ্রাম ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হয়েছেন বুলবুল কবির, জাসদের প্রার্থী আব্দুল হাফিজ তপন, স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন মজিবুল হক মুকুল এবং ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জানবার হোসেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বাহাদুরপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সোহেল রানা পবন, জাসদের প্রার্থী হয়েছেন আশিকুর রহমান ছবি, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনছুর আলী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হয়েছেন আহাদ আলী। মোকারিমপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন আব্দুস সামাদ, জাসদের প্রার্থী বেনজির আহম্মেদ বেনু, উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক বুলবুল আবু সাঈদ শামীম স্বতন্ত্র, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নয়ন এবং স্বতন্ত্র আব্দুল মান্নান।
জুনিয়াদহ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক পেয়েছেন শওকত আলী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হাসানুজ্জামান হাসান, জাসদের শাজাহান আলী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র মোহায়মেনুর ইসলাম। ধরমপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী সাহাবুল আলম লালু, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী স্বতন্ত্র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শামসুল হক, জাসদের আইয়ুব আলী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. রিপন। ভেড়ামারায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখনও পর্যন্ত কোথাও কোন ধরণের সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।
বিডি প্রতিদিন/এএ