নীলফামারী থেকে বাসযোগে শুক্রবার সকালে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিল শিক্ষার্থী শতাব্দী রায়ের। রবিবার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার অংশ নেওয়ার কথা তার। সকালের প্রস্তুতি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে জানতে পারেন বাস বন্ধ। সময়ের মধ্যে ঢাকা যেতে না পেরে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ওই শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, ‘আগামী ৭ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে আমার। এরপর ১২ নভেম্বর ঢাকায় টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৩ নভেম্বর রাজশাহীতে রুয়েট, কুয়েট এবং চুয়েটের যৌথ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেব। এখন বাস বন্ধে আমি যেমন সমস্যায় পড়েছি, তেমনি আমার ন্যায় অনেক শিক্ষার্থীর সমস্যা হবে।’
শুধু শতাব্দীই নয়, শুক্রবারের বাস ধর্মঘটে তার ন্যায় দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার অনেক শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। দূর পাল্লার বাস না থাকায় যাত্রা বাতিল হয়েছে তাদের। নিরুপায় হয়ে স্বল্প পথের যাত্রীরা চলাচল করেছেন ইজিবাইক অথবা থ্রি হুইলারে চেপে।
জেলা শহরের শাহীপাড়ার সুহিন আনছারী জানান, সকালে রংপুর যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় সে যাত্রা বাতিল করতে হয়েছে তাকে।
শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার ডোমার, জলঢাকা, সৈয়দপুর থেকে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সড়কে কোনো বাস চলতে দেখা যায়নি। বেলা দুইটার দিকে জেলা শহরের মাধার মোড় থেকে একটি বাস সৈয়দপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে দেখা গেলেও সেখানে কর্মরত চেইন মাস্টার মো. আলিমুদ্দিন জানান, অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের কারণে বিভিন্ন স্থানে থাকা এসব বাসকে সৈয়দপুর টার্মিনালে নেওয়া হচ্ছে।
বাস চালক সোহাগ আলী জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ডোমার বাসস্ট্যান্ডে ছিলেন তিনি। ধর্মঘটের কারণে সৈয়দপুর টার্মিনালে বাস রেখে বাড়িতে যাবেন।
জেলা শহর থেকে ঢাকা চলাচলের হানিফ পরিবহনের নীলফামারী কাউন্টার ম্যানেজার রাসেল আহমেদ বলেন,‘আজ (শুক্রবার) সকাল থেকে কোনো বাস ঢাকার উদ্দেশে ছাড়েনি। তেমনি ঢাকা থেকেও কোনো বাস নীলফামারীর উদ্দেশে ছেড়ে আসেনি।’
জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি শাহজাহান আলী চৌধুরী বলেন, জেলায় ১৪০টি বাস চলাচল করে বিভিন্ন রুটে। করোনা পরিস্থিতিতে পরিবহন ব্যবসায় ধস নেমেছে। আবার হঠাৎ করে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে অভ্যন্তরীণ রুট ছাড়াও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই