লাখো মানুষের চোখের জল আর ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে মা-বাবার কবরের পাশে চির নিদ্রায় শায়িত সাবেক বিচারপতি, প্রবীণ আইনজীবী ও বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তোফাজ্জাল হোসেন খান (টি এইচ খান)।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে নিজ এলাকা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের বিলডোরার ঔটি গ্রামে চতুর্থ নামাজে জানাজা শেষে মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে এই প্রবীণ আইনজীবীকে সমাহিত করা হয়।
জানাজার আগে টি এইচ খানের বড় ছেলে সাবেক সাংসদ আফজাল এইচ খান স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন। তার জীবনী তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনসহ নানা পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এর আগে উপজেলার হালুয়াঘাট সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা শেষে মরহুমের প্রতি ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ময়মনসিংহ-১ আসনের সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং এমপি, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, হালুয়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ, পৌর মেয়র খায়রুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাবেক সাংসদ শাহ শহীদ সারোয়ার, আবুল বাশার আকন্দ, উত্তর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, বিএনপি নেতা আবু ওয়াহাব আকন্দ, উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক সালমান ওমর রুবেলসহ সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।
গত রবিবার বিকাল ৫টার দিকে রাজধানীর শ্যামলী স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০২ বছর। তিনি সাবেক মন্ত্রী ও এমপি ছিলেন। তিন ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। ২০১১ সালে তিনি বিপত্নীক হন।
বিচারপতি টি এইচ খান নামে তিনি সমধিক পরিচিত হলেও তার প্রকৃত নাম তাফাজ্জাল হোসেন খান। টি এইচ খান ১৯৬৮ সালে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
এরপর ১৯৭৩ সালের জুলাই মাস থেকে আইন ব্যবসায় ফিরে আসেন। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে তিনি পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর আইন, শিক্ষা, ধর্ম, ভূমি ও রাজস্ব এবং ক্রীড়ামন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
এরপর ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদের নেতৃত্বে নতুন সামরিক আইন জারি করা হয়। তখন তিনি আইন পেশায় ফিরে যান। ১৯৮৬ সালে এরশাদের নির্বাচনে বিরোধিতা করার জন্য গ্রেফতার হন তিনি।
বিচারপতি টি এইচ খান ১৯৯২ সালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম প্রতিষ্ঠা করেন এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন