গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নৌকায় বসে জুয়া খেলার টাকা ছিনিয়ে নিতে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে খুন করেছে ছিনতাইকারীরা। চাঞ্চল্যকর এ খুনের ঘটনার প্রায় দুই বছর পর রহস্য উম্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ক্লুলেস এ খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতের নাম-মোঃ কামরুল ইসলাম (৩১)। সে ময়মনসিংহের পাগলা থানাধীন বারইহাটি এলাকার মৃত আব্দুস সাহিদের ছেলে। নিহত রুবেল মিয়া (৩২) গাজীপুরের কাপাসিয়া থানাধীন শহর টোক এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে। রুবেল মিয়া স্থানীয় টোক নয়ন বাজারে পেঁয়াজু, নিমকি, মুড়ালী ইত্যাদি খাবার তৈরি ও বিক্রির ব্যবসা করতেন।
গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল দুপুরে কাপাসিয়ার শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌকায় সন্ত্রাসীদের মারধরের শিকার হওয়ার পর হতে নিখোঁজ হন রুবেল মিয়া। তার সন্ধানে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে দু’দিন পর ৯ এপ্রিল সকাল সোয়া ১০টার দিকে গাজীপুরের কাপাসিয়া থানাধীন টোক নগরের আব্দুল হাই মুন্সির চর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে নিহত রুবেলের অর্ধ গলিত লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসি। খবর পেয়ে কাপাসিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে নিহতের বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ প্রায় ৬ মাস মামলাটি তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করতে পারে নি। এরপ্রেক্ষিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঢাকার নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই গাজীপুর জেলার উপর ন্যাস্ত হয়। চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এ খুনের মামলার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত কামরুল ইসলামকে পাগলা থানাধীন বারইহাটি এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। রবিবার আদালতে সে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
তিনি জানান, ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল দুপুরে ময়মনসিংহের পাগলা থানাধীন বারইহাটি বাজার সংলগ্ন গাজীপুরের কাপাসিয়া থানাধীন টোক নগর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে নৌকায় টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলছিল রুবেল মিয়াসহ কয়েকজন। এ খবর পেয়ে জুয়া খেলার টাকা ছিনিয়ে নিতে বারইহাটি বাজার এলাকার কয়েক যুবক অপর একটি নৌকা নিয়ে ওই নৌকাকে ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে নদীতে লাফিয়ে পড়ে সঙ্গীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও রুবেল মিয়া ছিনতাইকারীদের হাতে ধরা পড়ে। পরে ছিনতাইকারীরা রুবেলকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং তার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়। এতে রুবেল অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে তাকে নদীতে ফেলে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। তারা ছিনিয়ে নেয়া টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেয় বলে গ্রেফতারকৃত কামরুল স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর এ হত্যার প্রায় দুই বছর পর রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম