টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ময়থা বাজার ও ফুলকী পশ্চিমপাড়া বাজার এলাকার ১০ টাকা কেজি দরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির উধাও হওয়া ২১৭ বস্তা চালের হদিস মিলেছে। অভিযুক্ত দুই ডিলার চালের বস্তাগুলো স্টোর রুমে তুলেছেন। সোমবার দিবাগত রাতের আঁধারে ওই দুই ডিলারের স্টোর রুমে চালের বস্তাগুলো আনা হয়। পরিবহনের সমস্যাজনিত কারণে চালের বস্তাগুলো পরে স্টোর রুমে আনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ডিলাররা।
স্থানীয়রা জানায়, নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী গত সোমবার সকালে উপকারভোগীরা বাসাইল উপজেলার ময়থা বাজার ও ফুলকী পশ্চিমপাড়া বাজার এলাকায় চাল আনতে যান। এ সময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে কয়েকজন ইউপি সদস্যসহ আরও কয়েকজন মিলে চালের বস্তার হিসাব নেন। এ সময় ময়থা উত্তরপাড়া এলাকার ডিলার নাছরিন বেগমের স্টোর রুমে ১৩০ ও ফুলকী পশ্চিমপাড়া বাজার এলাকায় জাকির হোসেন পাপনের স্টোর রুমে ৮৭ বস্তা চাল কম পাওয়া যায়। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল আলম বিজু সেখানে গিয়ে চাল বিতরণ বন্ধ করে দেন। চাল উধাও হওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন অভিযুক্ত ডিলার ও সংশ্লিষ্টরা। একপর্যায়ে রাতের আঁধারে ডিলারদের স্টোর রুমে উধাও হওয়া চালের বস্তা তোলা হয়।
ফুলকী ইউপি চেয়ারম্যান শামছুল আলম বিজু জানান, বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের কারণে অভিযুক্ত দুই ডিলার উধাও হওয়া চাল তাদের স্টোর রুমে তুলেছেন। এরপর মঙ্গলবার থেকে চাল বিতরণ শুরু করা হয়েছে। তবে উধাও হওয়ায় প্রতিটি বস্তাতেই ৩০ কেজির স্থলে দুই থেকে তিন কেজি করে চাল কম রয়েছে।
তিনি আরও জানান, কম চাল থাকার কারণে বস্তাগুলোর বিতরণ বন্ধ রাখা হয়। শুধু আগে থেকে স্টোর রুমে থাকা বস্তার চাল বিতরণ করা হচ্ছে। তার ধারণা, স্টোর রুমে তোলার আগেই উধাও হওয়া চালগুলো করটিয়ায় বিক্রি করা হয়েছিল। চাপে পরে রাতেই আবার বেশি দামে কিনে স্টোর রুমে তোলা হয়েছে।
চালের বস্তা উধাও হওয়ার কথা অস্বীকার করে ফুলকী পশ্চিমপাড়া এলাকার ডিলার জাকির হোসেন পাপন জানান, পরিবহনজনিত সমস্যায় অবশিষ্ট চালের বস্তাগুলো আশপাশের দোকানে রাখা হয়েছিল। পরে রাতে সেগুলো স্টোর রুমে আনা হয়েছে। তবে সেই চালের বস্তার ওজন কম বা বেশি সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত নন।
বাসাইল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কনক কান্তি দেবনাথ জানান, প্রাথমিকভাবে চাল উধাও হওয়ার প্রমাণ পেয়েছি। এছাড়া উধাও হওয়া চালের বস্তা স্টোর রুমে তোলা হলেও ওই বস্তায় চাল কম রয়েছে। বস্তায় নেই পুষ্টিচালের স্টিকার। কম থাকা বস্তায় চাল পরিপূর্ণ করে বিতরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বস্তায় চাল কম থাকা ও পুষ্টিচাল না থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত ডিলারদের শোকজ করা হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব না পেলে তাদের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।
এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা পারভিন জানান, খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। প্রমাণ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই