নদীবেষ্টিত মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের দৌলতপুর শিবালয় উপজেলার বৃহদাংশ চরাঞ্চল। কৃষি ও গবাদি পশু পালন চরবাসীর আয়ের প্রধান উৎস। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চরাঞ্চলের লোকজন সাধ্যমত গবাদি পশু পালন করেন। এগুলো বিক্রি করেই তারা বেশি লাভবান হন। কিন্তু ঈদের সময় বর্ষাকাল হওয়ায় পদ্মা-যমুনা পানিতে ভরপুর থাকে। এ সুযোগে জলদস্যু ও ডাকাতরা হামলা করে গরু নিয়ে যায়। এনিয়ে তারা আতঙ্কে রয়েছে। গরু চোরের হাত থেকে রক্ষা পেতে তারা এখন থেকেই রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন।
নদী ভাঙনের পর প্রভাবশালী কৃষকরাও হয়ে যায় ভূমিহীন, নিঃস্ব। দীর্ঘদিন তারা মানবেতর জীবনযাপন করেন। উপায়ন্তর না থাকায় বাধ্য হয়ে একাধিক ভাঙনের শিকার হয়েও আশেপাশে মাথাগুজে পড়ে রয়েছেন তারা। এক সময়ের ধনাঢ্য পরিবার এখন কৃষিকাজ ও গবাদি পশু পালন করে জীবিকা নির্ভর করছেন।
সরেজমিনে হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, প্রায় বাড়িতেই কম বেশি গরু ছাগল রয়েছে। লেচড়াগঞ্জের নসের খা (৬৯) ও একাব্বর (৫২) বলেন, সারা বছর কৃষি কাজ করে চলি। ঈদ মৌসুমে গরু বিক্রির টাকাই আসল আয়। বর্তমানে গবাদি পশুর খাবারের অনেক দাম। এবার লাভ হবে কিনা জানি না। গরু চুরি যাবার ভয়ে এখন থেকেই যার যার গরু সে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। বর্ষার সময় গরু চুরির হিড়িক পড়ে যায়।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো. মাহবুবুল ইসলাম টুকু মিয়া বলেন, জেলায় প্রায় ছোটবড় মিলে ১০ হাজার ৭০০ গবাদি পশুর খামার রয়েছে। যার প্রায় তিনহাজার চরাঞ্চলে অবস্থিত। প্রশাসনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। এবার কোনো ধরনের গরু চুরির আশঙ্কা নেই।
হরিরামপুর উপজেলার সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ বলেন, গরু চুরি রোধে প্রতিবছর লোকজন পাহারা দেন। চরে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র হচ্ছে। যার কার্যক্রম খুব ঢিলেঢালা। সেখানে যদি সার্বক্ষণিক পুলিশ অবস্থান করতো তাহলে চরাঞ্চলের লোকজন গরু চোরের হাত থেকে রক্ষা পেত।
হরিরামপুর তদন্ত কেন্দ্রের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, চরাঞ্চলে তদন্ত কেন্দ্রের কাজ চলমান। কিছুদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে। বর্ষা মৌসুমে যাতে গবাদি পশু চুরি না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার গরু চুরি নিয়ে কোনো আশঙ্কা নেই।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা