সুনামগঞ্জে পৃথক ৫টি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের রিপন মিয়া, ধর্মপাশা উপজেলার ফাতেমানগর গ্রামের রুকন মিয়া, জগন্নাথপুর উপজেলার ইসহাকপুর গ্রামের শাহিন মিয়া, সদর উপজেলার ইছাগরি গ্রামের শৈলেন দাস ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামের আসাদ মিয়া।
আদালত সূত্র জানায়, সাজাপ্রাপ্ত রিপন মিয়া ভিকটিমের সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্ব ধর্ষণ করে। পরে নির্যাতিতা সন্তানসম্ভবা হয়ে পুত্র সন্তান প্রসব করেন।ডিএনএ পরীক্ষায় বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এই মামলায় আদালত ৭ জনের স্বাক্ষী প্রমাণ ও অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা প্রদান করেন।
অন্যদিকে, সাজাপ্রাপ্ত রুকন মিয়া ধর্মপাশা উপজেলার একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার পথে জোরপূর্বক অপহরণ করে ধর্ষণ করে। পুলিশের অভিযোগপত্র ও ৯ জনের স্বাক্ষী প্রমাণে অপহরণ-ধর্ষণের বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে আসামি রুকন মিয়াকে যাবজ্জীবন ও মামলার অপর আসামি আব্দুল লতিফকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
এদিকে, আসামি শাহিন মিয়া জগন্নাথপুর উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লীর পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার পথে জোরপূর্বক অপহরণ ও ধর্ষণ করে। পুলিশের অভিযোগপত্র ও স্বাক্ষী প্রমাণে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
অপর মামলায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শৈলেন দাস এলাকার নবম শ্রেণির ছাত্রীর প্রাইভেট টিচার ছিলেন। তিনি পড়ানোর সুবাধে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। একপর্যায়ে ছাত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। বিষয়টি স্বাক্ষী প্রমাণে প্রমাণিত হওয়ায় শৈলেন দাসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
এদিকে, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দশম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণ করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও বিয়ে করায় ঘটনায় আসামি আসাদ মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। তার বাবা ইদন মিয়া এবং মা জগত বানুকে খালাস প্রদান করেন আদালত।
আসামি পক্ষের আইনজীবীগণ জানান, রায়ের বিবাদী পক্ষ অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি নান্টু রায় বলেন, এক সঙ্গে ৫টি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার বিচারকার্য সম্পাদন করে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছেন আদালত। আদালতের এ ধরনের রায়ে সাধারণ মানুষ আস্থাশীল। জেলার নারী নির্যাতন রোধে এসব রায় মাইলফলক হয়ে থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন