আর্থিক কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ফেনী সেন্ট্রাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে অপসারণের দাবিতে এবার মাঠে নামলেন স্কুলের সকল শিক্ষক ও কর্মচারীরা। বুধবার স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীরা তাদের স্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি নিয়ে উপস্থিত হন ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসানের কাছে।
লিখিত বক্তব্যে তারা জানান, সিলেবাস তৈরি ও বই পাঠ্য করার ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক একক সিদ্ধান্ত নেন। কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়া একক সিদ্ধান্তে বিভিন্ন শ্রেণির পরীক্ষা গ্রহণ করেন।
শিক্ষররা জানান, প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন শিক্ষকদের ‘পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে নেব’, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে লটকাইহালামু’, ‘চাকরি কেমনে করেন ছাইলমু’, ‘কলম ধইরলে চাকরি একজনেরও থাকবে না’ এমন ভাষা ব্যবহার করেন।
তারা জানান, গত দুই বছর অষ্টম ও নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন ফি, এসএসসির ফরম বিক্রয়ের কোনো টাকা স্কুল ফান্ডে জমা দেওয়া হয়নি। নতুন বছরে ভর্তির টাকাও প্রধান শিক্ষক স্কুল ফান্ডে জমা দেননি। ২০২১ সালে মহিলা অভিভাবকদের ব্যবহারের জন্য ওয়াশ রুম তৈরি বাবদ ৭০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষক নিয়েছেন। অথচ আজ পর্যন্ত কাজ করেননি।
তারা আরও জানান, নিয়ম না মেনে প্রতি মাসে নাস্তা ফি বাবদ ২০-৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। নিজের বেতন স্কুল ফান্ড থেকে ১০ হাজার টাকা থেকে ৪১ হাজার টাকা করেছন।
স্কুলের দুইজন মহিলা পিয়নকে বিনা কারণে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসিয়ে রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। তারা আরও অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক নির্মাণ কাজে খালি ভাউচার সংগ্রহ করে নিজে পূরণ করে স্কুলে জমা দেওয়াসহ এমন কোনো অনৈতিক কাজ নেই, যা তিনি করেন না।
বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলনে নামে স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ, জেলা প্রশসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন শ্লোগানে মাতিয়ে তুলেন পুরো রাজপথ। তারা দাবি করেন, প্রধান শিক্ষককে অপসারণ না করলে তারা বৃহত্তম আন্দোলনে যাবেন। তাদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন সাবেক শিক্ষার্থীরাও।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা। স্কুল পরিচালনা কমিটি ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, তাদের কাছেই বিস্তারিত জানতে পারবেন।
জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান জানান, এ বিষয়ে একাধিক অভিযোগ হাতে এসেছে। শিগগিরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগের সত্যতা পেলে ববস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই