২৮ মে, ২০২২ ১৮:১১

‘আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না’

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

‘আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের অধীনে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। এই ভোট ডাকাত ও মাফিয়া সরকারকে হটিয়ে নিরপেক্ষ সরকার কায়েম করা হবে। আর নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গঠিত নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হবে। 

তিনি বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বলেছিল ঘরে ঘরে চাকরি দিবে, বিনা পয়সায় সার দিবে, আর দশ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। কনষ্টেবলের চাকরি নিতে হলে লাগে ২০ লাখ টাকা। তাও আওয়ামী লীগ না করলে কেউ চাকরি পাচ্ছে না। দেশের মানুষ সর্বোচ্চ মূল্য দিয়ে এখন চাল কিনে খাচ্ছেন। কোনো কৃষক সারও বিনা পয়সায় পায়নি। এ সরকার প্রতারণা ও ভাউতাবাজীর সরকার।

মির্জা ফখরুল ইসলাম শনিবার ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল উপলক্ষে সদর উপজেলার ডাকবাংলা আব্দুর রউফ কলেজ মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলন চলাকালে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন দেশনায়ক তারেক রহমান লন্ডন থেকে দুপুর ১২.৩০ টায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন। 

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এসএম মশিয়ুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, কেন্দ্রীয় সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খাঁন শিমুল, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির জেলা যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মালেক, নির্বাহী সদস্য আব্দুল ওহাব, নির্বাহী সদস্য মীর রবিউল ইসলাম লাবলু, সদর উপজেলা সভাপতি এ্যাডভোকেট মুন্সি কামাল আজাদ পান্নু, মহেশপুর, পৌর সভাপতি আমিরুল ইসলাম চন্নু, মহেশপুর উপজেলা সভাপতি মেহেদী হাসান রনি, শৈলকূপা পৌর সভাপতি আবু তালেব, উপজেলা সভাপতি আবুল হোসেন, কোটচাঁদপুর পৌর সভাপতি সালাউদ্দিন বুলবুল সিডল, উপজেলা সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, হরিণাকুন্ডু পৌর সভাপতি জিন্নাতুল হক খাঁন ও উপজেলা সভাপতি আবুল হোসেন মাস্টার প্রমুখ। 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এ দেশে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করে মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করেছে। তাই সীমাহীন লুটপাট ও চুরির কারণে তারা মাথা নিচু করে থাকে। 

তিনি বলেন, এ সরকারের চোরদের তাই মাথা নিচু করেই ক্ষমতা ছাড়তে হবে। তারপরও তাদের রেহাই নেই। ভোট ডাকাতি, গণতন্ত্র হত্যা, বিপন্ন মানবাধিকার, মানুষ হত্যা, খুন ও গুমের কারণে তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, চরম দুঃশাসনে দেশবাসী যখন দিশেহারা তখন আলোকবর্তিকা হয়ে আমাদের মাঝে মুক্তির ঝান্ডা নিয়ে এসেছেন তারেক রহমান। তার নেতৃত্বে এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের পতন ঘটিয়ে সত্যিকার জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার কায়েম করা হবে। মিজা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, এ সরকার নির্বাচতি সরকার নয়। এরা আধিপত্যবাদ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে। তারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। ভোট ও কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান আন্দোলন নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগরে অস্ত্রধারী গুণ্ডারা ছাত্রদলের ছেলেদের উপর ঝাপিয়ে পড়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি, তারা নারীদের নির্যাতন করেছে। অনেক নারী আইসিউতে চিকিৎসাধীন। তারদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগ তাদের ফ্যাসিষ্ট রুপ আবোরা প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও পুলিশকে কাজে লাগিয়ে এই ভোট ডাকাতির সরকার খুলনা ও পটুয়াখালীতে বিএনপির উপর হামলা করেছে। 

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক হুইপ মসিউর রহমান বলেন, এই ফ্যাসিষ্ট সরকারের দুঃশাসন থেকে মুক্তি পেতে হলে রক্ত দিতে হবে। ত্যাগ না করলে মুক্তি নেই। তিনি বলেন, বৃদ্ধ বয়সে আমার নামে ২৮টি গয়েবী মামলা। ১০ বছরের জেল নিয়ে আমি রাজনীতি করছি। জানি না এটাই আপনাদের সঙ্গে শেষ দেখা কিনা। তিনি বলেন, আমার মৃত্যুর খবর পেলে অন্তত সবাই দেখতে আসবেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। তাই এই দলের নেতা নির্বাচতি হচ্ছে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে। তিনি বলেন, এ সরকার ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু ৩০ হাজার কোটি টাকা করে বিদেশে টাকা পাচার করেছে। মেগা প্রকল্প মানেই মেগা দুর্নীতি। 

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, গণতন্ত্র আসলে কি তা ঝিনাইদহের কাউন্সিল হওয়ার পর শেখ হাসিনা ও তার আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন শিক্ষা নিতে পারে। 

কাউন্সিলে পুলিশের গুলিতে নিহত মহেশপুর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের বিএনপি কর্মী ইন্তাজুলের মেয়ে সুমাইয়া খাতুন, নিহত পলাশের পিতা আরাপপুরের গোলাম মোস্তফা ও শহরের কলাবাগান পাড়ার যুবদল নেতা মির্জার মা তারেক রহমানের দেওয়া আর্থিক সহায়তা গ্রহন করেন। বিএনপি কর্মী ইন্তাজুলের মেয়ে সুমাইয়া খাতুন ও পলাশের পিতা গোলাম মোস্তফা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিয়ে বলেন, কি দোষ ছিল তাদের। দোষ একটাই তারা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দল করতেন। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর