শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল করিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ১০ মাস পর বিজ্ঞপ্তি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিস, শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালের পহেলা জানুয়ারী নারী শিক্ষার উন্নয়নের লক্ষ্যে উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নে 'নয়াবিল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়'টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। প্রধান শিক্ষক, অফিস সহকারী, আয়া, দপ্তরী ও নৈশপ্রহরীসহ ৯ জন এমপিওভুক্ত হলেও ৫ জন শিক্ষকের এখনো এমপিও হয়নি। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের জন্য ২০০৪ সালের অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে বাংলা, ইংরেজী, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও নৈশ প্রহরী এই ৪ টি পদের জন্য পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এবং ওই ৪ টি পদে শামীমা নাসরিন শাপলা, রাবেয়া বসরি, আনোয়ারা বেগম ও আবদুর রহিম এই ৪ জনকে নিয়োগ দেন ৩১ জানুয়ারী ২০০৪ সালে। এর ১০ মাস পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় এই ৪ জনের আজও এমপিও হয়নি।
আবার ২০১৫ সালে আইসিটি, কৃষি ও সহকারী-গ্রন্থাগারিক এই ৩ পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। কিন্তু যেদিন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় সেই দিন থেকেই ম্যানেজিং কমিটির নিয়োগ ক্ষমতা চলে যায় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) হাতে। সেই হিসেবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি আর শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারেন না। কিন্ত প্রধান শিক্ষক ব্যাক ডেট দেখিয়ে আইসিটি শিক্ষক হিসাবে নকলা উপজেলার জীবন নেছাকে মোটা অংকের বিনিময়ে নিয়োগ দেন বলে অভিযোগ এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজান শেখ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর কবীরকেও স্বাক্ষর দিতে বলেন বলে। তবে দায়িত্বশীলরা কেউ স্বাক্ষর করেননি বলে জানা যায়। পরে প্রধান শিক্ষক সকল স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নিয়োগ চুড়ান্ত করে এমপিওভুক্তির জন্য উপরে পাঠান বলে জানা যায়।
পরবর্তীতে আবার ২০২১ সালের মার্চ মাসের ১৪ তারিখে সহকারী শিক্ষক আইসিটি ও কৃষি এই দুইটি পদের শিক্ষক নিয়োগের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর আবদেন করেন প্রধান শিক্ষক। ওই সময়ের (২০১৫ সালের) ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিজান শেখ বলেন, প্রধান শিক্ষক আমার কাছে কাগজপত্র নিয়া আসছিলো নিয়োগের স্বাক্ষর নিতে। কিন্তু আমি স্বাক্ষর দেইনি। পরে কেমনে নিয়োগ দিলো আমি কিছুই জানি না।
প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল করিম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে প্রার্থীরা টাকা দিতে চেয়েছিলো কিন্তু আমি টাকা নেইনি আর নিয়োগও দেইনি। আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাই আমার বিরুদ্ধে লাগছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, প্রধান শিক্ষক আমার কাছে স্বাক্ষর নিতে আসছিলো। আমি দেইনি। আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক এমপিওর জন্য আবেদন করেছেন। ওই শিক্ষকের কাঙ্খিত যোগ্যতা নেই। তাই তার এমপিও হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল