ভাষা সৈনিক হামিদুজ্জামান এহিয়ার ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে শহরের কলেজ পাড়ায় নিজ বাড়িতে দোয়া মাহফিল ও কাঙালি ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের উত্তাল তরঙ্গ যখন ঢাকাসহ মফস্বলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে তখন তিনি তৎকালীন মাগুরা, তার গ্রামের বাড়ি নাকোল ও যশোরের ছাত্র সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
সহপাঠীদের নিয়ে তিনি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে অগ্রবর্তী থেকেছেন। তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ভাষা আন্দোলনের সভায় যোগ দিয়েছিলেন। ভাষা আন্দোলনে ছাত্র নেতৃত্ব দেয়ার কারণে ১৯৫৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বেলুচ আর্মড ফোর্স ভাষাসৈনিক হামিদুজ্জামান এহিয়াকে গ্রেফতার করে। সে সময় তিনি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। গ্রেফতার হওয়ার কারণে সে সময় তার ছাত্রত্ব বাতিল হয়। পরে তিনি পাঠ বিরতির পর মাগুরা মহকুমা মডেল হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন এবং মাগুরা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।
সর্বশেষ কর্ম জীবনে তিনি মাগুরা সদর উপজেলা রাজস্ব কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি সমাজ সেবামূলক কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এ সময় তিনি মাগুরা শ্রীপুরের নাকোল সম্মিলনী ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। ভাষা আন্দোলনে গৌরবদীপ্ত ভূমিকার জন্য তিনি জননেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্য ও আশীর্বাদ লাভ করেন।ভাষা আন্দোলনে তার গৌরবময় ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ ভাষা আন্দোলন গবেষণা কেন্দ্র ও মিউজিয়াম এবং সাপ্তাহিক সমধারা পত্রিকা তাকে ২০১৪ সালে মরণোত্তর সম্মাননা প্রদান করে। এ ছাড়া বর্তমান সরকার তার নামে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল-কেষ্টপুর সড়কের নামকরণ করেন।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর