মালয়েশিয়ায় আত্মহত্যা করা আবুল বাশারের (৪৫) লাশ শুক্রবার কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ নানশ্রী গোলাপদী হাটি গ্রামে আনা হয়। জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে গত ১৬ অক্টোবর মালয়েশিয়ায় তিনি ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। আবুল বাশারের ভাই মাসুদ মিয়া জানান, সাত ভাই তিন বোনের মধ্যে বাশার তৃতীয়। প্রায় ১৮ বছর আগে পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার সুতুরকান্দা গ্রামের সুলতান মিয়ার মেয়ে আয়শা খাতুনের সাথে তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। উন্নত জীবনের আশায় প্রায় পাঁচ বছর আগে মালয়েশিয়ায় যান বাশার। স্বামীর অনুপস্থিতিতে পশ্চিম নানশ্রী গ্রামের জহুর আলীর ছেলে বোরহানের সাথে পরকিয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে আয়শার। বোরহানের স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। পরকিয়ার জেরে প্রায় ছয় মাস আগে বোরহানের সাথে চলে যান আয়শা। সাথে নিয়ে যান মালয়েশিয়া থেকে স্বামীর পাঠানো প্রায় ১২ লাখ টাকা।
মাসুদ মিয়া আরও জানান, সন্তানদের দিকে চেয়ে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তার ভাই। সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা এবং টাকার শোকে অবশেষে মালয়েশিয়াতেই আত্মহত্যা করেন তিনি।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বোরহান। তিনি জানান, প্রায় চার বছর আগে আবুল বাশারকে তালাক দেন আয়শা। পরে শরিয়তসম্মতভাবে তিনি পাঁচ লাখ টাকা দেনমোহরে আয়শাকে বিয়ে করেন। আগের স্বামীর কাছ থেকে আয়শা কোন টাকা পয়সা নিয়ে যাননি বলে দাবি করেন বোরহান।
এদিকে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি তালাক সংক্রান্ত একটি এফিডেভিট করেন আয়শা। এতে তিনি দাবি করেন, ছোট সন্তান জন্মের পর থেকে যৌতুকের জন্য তাকে অত্যাচার নির্যাতন করে মৌখিকভাবে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন স্বামী। পরে আবারো ঘর সংসার করবে বলে ফিরিয়ে নেন স্ত্রীকে। এর প্রায় এক বছর পর স্বামী বিদেশে চলে যান। বিদেশ যাবার পর চার বছর স্ত্রীর কোন খোঁজ খবর নেননি, এমনকি ভরণপোষণও দেননি। এক পর্যায়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন অত্যাচার নির্যাতন করে সন্তানদেরকে রেখে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ অবস্থায় প্রায় তিন মাস আগেই স্বামীকে তালাক দেন তিনি।
তালাক সংক্রান্ত এফিডেভিটের একদিন পর অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি বিয়ে সংক্রান্ত এফিডেভিট করেন আয়শা ও বোরহান। এতে তারা দাবি করেন দীর্ঘদিন ধরেই একে অপরের সাথে তারা পরিচিত। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেম ভালোবাসা গড়ে ওঠে। এ অবস্থায় তারা পরস্পরের সম্মতিতেই বিয়ে করেন।
আবুল বাশারের আত্মহত্যা এবং স্ত্রী আয়শা অন্যত্র বিয়ে করায় তিন সন্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানান বাশারের ভাই মাসুদ মিয়া।
বিডি প্রতিদিন/এএম